আরএফএলের ম্যানেজার পরিচয়ে বাড়ি ভাড়া নেয় জঙ্গিরা
মৌলভীবাজারে ঘিরে রাখা দুটি বাড়ির মধ্যে টিনশেড বাড়িটি দুই মাস আগে আরএফএল’র ম্যানেজার পরিচয়ে ভাড়া নেন বেলাল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। বাড়িটির কেয়ারটেকার জুয়েল মিয়া (৩৫) বুধবার দুপুরে জানান, লন্ডন প্রবাসী সাইফুল রহমানের টিনশেড পাকা বাড়িটি প্রায় এক একর জায়গার উপর অবস্থিত। গাছ-গাছালি ঘেরা। আরএফএলের ম্যানেজার পরিচয়ে মাসিক ৬ হাজার ৬০০ টাকা ভাড়া হিসাবে টিনশেড বাড়িটি বাড়া নেন বেলাল আহমেদ।
এ বাড়িতে বেলাল তার স্ত্রী ও শ্যালক থাকতেন। তারা খুব ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন এবং রাতে বাড়ি ফিরতেন। গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় জুয়েলই মঙ্গলবার পুলিশকে তাদের বিষয়ে জানায়। এরপর বুধবার ভোরে পুলিশ এসে বাড়িটি ঘিরে ফেলে।
জুয়েল মিয়া আরো জানান, বরহাটের নির্মাণাধীন তিনতলা বাড়িটি তিন মাস আগে আরএফএল’র ম্যানেজার পরিচয়ে মাসিক ৭ হাজার ২০০ টাকায় ভাড়া নেন মাহফুজ নামে আরেক ব্যক্তি। পুরো বাসায় থাকতেন মাহফুজ তার চার সন্তান-স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ীসহ ৮ জন। এ ছাড়া ওই বাড়িতে আর কেউ থাকতেন না।
ফতেপুর গ্রামের বাসিন্দা রুম্মান আহমেদ শিপু জানান, বাড়ির মালিক অনেক আগে থেকেই লন্ডনে থাকেন। টিনশেড বাড়ির কেয়ারটেকার তার আত্মীয় জুয়ের মিয়া এবং একজন নারী। তারা বাড়ি দেখাশোনা করে।
লন্ডন প্রবাসী সাইফুল রহমানের টিনশেড বাড়িটির পাশের বাড়ির বাসিন্দা নাসির মিয়া (৪০) জানান, এ বাড়িতে যারা ভাড়া থাকত তাদের দিনের বেলা দেখা যেত না। খুব সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে ফিরত।
এদিকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়ি দুটিতে মোট ১১ জন জঙ্গি অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার রওশনুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি জানান, দুটি আস্তানায় অবস্থান করা ১১ জঙ্গিকে জীবিত আটকের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার ভোরে একই ব্যক্তির মালিকানাধীন বাড়ি দুটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সকালে বাড়ির ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে র্যাব-পুলিশকে লক্ষ্য করে ভেতর থেকে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে জঙ্গিরা। দুপুর ১টা পর্যন্ত বাড়ি দুটি থেকে মাঝে মধ্যে দু’একটি গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে পৃথক ঘটনাস্থলে পুলিশ-র্যাব, ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা পৌঁছেছে। সোয়াট টিম পৌঁছলে মূল অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার রওশনুজ্জামান সিদ্দিকী।
মন্তব্য চালু নেই