দুর্নীতির প্রতিবাদে রাজনীতি ছেড়ে আলুর ব্যবসা

রাজনীতিতে এসেছিলেন সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি দূর করে সাম্যের সমাজ গড়ে তুলতে। কিন্তু পদে পদে বাধাগ্রস্ত হয়ে দুর্নীতির প্রতিবাদে রাজনীতিই ছেড়ে দিয়েছেন বিনোদ ভগৎ। একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা বিনোদ এখন জীবন চালান আলুর ব্যবসা করেন।

ভারতের ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর মোরাবাদি ময়দান লাগোয়া বাজারে আলুর দোকান বিনোদ ভগতের। রাজনীতির ময়দান ছেড়ে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি করেন এক সময়ের এই দাপুটে নেতা।

রাজনীতিতে ফেরার কোনো ইচ্ছা নেই তার। রাজনীতিতে ফেরার প্রসঙ্গে একগাল হেসে তার জবাব, ‘আলু বেঁচে দিনে ১০০ টাকা উপার্জন করলেও শান্তি। দুর্নীতির ছোঁয়া নেই সেই টাকায়।’

কয়েক দশক আগেও বিনোদ ভগতের জনসভায় হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাতেন। তার ডাকা কর্মসূচিতে স্তব্ধ হয়ে পড়তো গোটা রাজ্য। রাজ্যের অন্যতম রাজনৈতিক সংগঠন ‘ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’র (আজসু) প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন বিনোদ। কিন্তু দুর্নীতিতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে রাজনীতিবিমুখ হয়েছেন এক সময়ের সম্ভাবনাময় এই নেতা।

মোরাবাদি ময়দান লাগোয়া বাজারে আলুর দোকানে বিনোদের ছবি দেখে প্রথমে চিনতে পারেননি পুরনো দিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা। তাদেরই একজন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মরাণ্ডিও। এক সময় তার ডাকে সাড়া দিয়ে বিজেপিতেও যোগ দিয়েছিলেন বিনোদ। কয়েক দিনের জন্য ছিলেন জেএমএমেও। পরে অবশ্য রাজনীতি থেকেই দূরে সরে যান।

কেন ছাড়লেন রাজনীতি? প্রশ্নের জবাবে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বিনোদ, বললেন- ‘নেতা-মন্ত্রীরা গাড়ি নিয়ে ঘুরছেন। প্রান্তিক, গরিব, আদিবাসীরা যেমন আগে ছিলেন, তেমনই রয়ে গেলেন। চারপাশে দুর্নীতি। এমন রাজ্যের স্বপ্ন তো আমি দেখিনি।’

বিনোদ বলেন, ‘গরিব মানুষগুলোর জন্য যৌবনে আন্দোলন করেছি, এখনও তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিতে চাই।’

কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে একসময়ে রাজ্য কাপানো বর্তমানের আলু ব্যবসায়ী বিনোদ বলেন, ‘রাজনীতির কথা বেশি বলতে চাই না।’



মন্তব্য চালু নেই