‘আম্পায়ারদের কোন যোগ্যতাই নেই!’

শুধুমাত্র বাংলাদেশের মানুষই নন, পুরো বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীরা দেখেছে কিভাবে আইসিসি আর আম্পায়াররা মিলে মেলবোর্নে বাংলাদেশকে হারিয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় করে দিয়ে জিতিয়েছে ভারতকে। মেলবোর্নে বাজে আম্পায়ারিংয়ের বিপক্ষে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে পুরো দেশ। পুরো দুনিয়া জুড়ে এখন সবাই জানে, আইসিসি মানেই হলো ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’।

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ পরিচালনাকারী দুই আম্পায়ার পাকিস্তানের আলিম দার এবং ইংল্যান্ডের ইয়ান গোল্ড- দু’জনই আইসিসির এলিট প্যানেলভূক্ত। আলিম দার তো বেশ কয়েকবার সেরা আম্পায়ারের পুরস্কারও জিতেছেন। অথচ, ভারতের টাকার কাছে কিভাবেই না বিক্রি হয়ে যেতে পারেন বিশ্বের অন্যতম সেরা হিসেবে পরিচিত এই আম্পায়ারও। ইয়ান গোল্ড কিংবা টিভি আম্পায়ার স্টিভ ডেভিসও যে বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন, সেটা তাদের খেলা পরিচালনার পরেই বোঝা গিয়েছিল।

আইসিসির এলিট প্যানেলের হোন কিংবা যে প্যানেলেরই হোন না কেন, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ পরিচালনাকারী আম্পায়ারদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ আইসিসি প্রেসিডেন্ট আ হ ম মোস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবারিই মেলবোর্নে ম্যাচ শেষে বাংলাদেশী মিডিয়ার সাথে কথা বলতে গিয়ে এই গুরুতর অভিযোগ তোলেন তিনি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে তার তদন্ত হওয়া উচিৎ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এবং আইসিসি প্রেসিডেন্ট আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি যা দেখেছি তা থেকে বলতে পারি, আম্পায়ারিং ছিল সত্যিই খুব নিম্ন মানের। আমার তো মনে হয় না এই আম্পায়ারদের কোন যোগ্যতা আছে। দেখেই মনে হয়েছে, তারা কোন একটা বিষয় সিদ্ধান্ত নিয়েই মাঠে নেমেছিল, যে করেই হোক বাংলাদেশকে হারাতে হবে। কথাগুলো আমি বলছি, আইসিসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, একজন ক্রিকেট সমর্থক হিসেবে।’

মানুষের ভুল হতেই পারে। আম্পায়াররাও ভুলের উর্ধ্বে থাকবেন না এটা নিশ্চিত। তবে সেটা যদি হয় ইচ্ছাকৃত তাহলে সেটা শুধু দুঃখজনক ঘটনাই নয়, রীতিমত অপরাধও। আইসিসি প্রেসিডেন্টও একই কথা মনে করেন। তিনি বলেন, ‘আম্পায়ারদের ভুল হতেই পারে। কিন্তু আইসিসিকে অবশ্যই দেখতে হবে এই ভুলগুলো ইচ্ছাকৃত কি না। কারণ, সবকিছুরই রেকর্ড রয়েছে। আইসিসিকে তদন্ত করতেই হবে এবং দেখতে হবে এখানে অন্য কিছু ছিল কি না।’

আইসিসি প্রেসিডেন্ট মনে করেন, এ ধরনের বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হলে নিশ্চয় অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোও এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতো। তিনি বলেন, ‘আইসিসির পরবর্তী বৈঠকে অবশ্যই আমি এ বিষয়টা উত্থাপন করবো। কারণ, এসব ঘটনা পুরো আম্পায়ারিংকেই বিতর্কিত করে তুলছে, আইসিসিকেও বিতর্কের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে।’
আইসিসিকে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল বলতেও ভুল করলেন না মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘আইসিসি এখন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। আমি ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হতে চাই না। প্রয়োজনে পদত্যাগ করবো।’

বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, ‘বাজে আম্পায়ারিংয়ের বিষয়ে আমি আইসিসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া মেলবোর্নে আইসিসির দায়িত্ববান আর কাউকে পাইনি যে কথা বলব। তবে এ বিষয়ে যা যা করা প্রয়োজন, তা তা আমরা করবো।’



মন্তব্য চালু নেই