সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পণ্ড
আমি বড় মুসলমান : গাফ্ফার চৌধুরী (ভিডিওসহ)
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী রবিবার (৫ জুলাই) জ্যামাইকার তাজমহল পার্টি হলে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান প্রতিবাদের মুখে পণ্ড হয়ে গেছে।
‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবার’ নামের একটি সংগঠন এই সংবর্ধনার আয়োজন করে।
বাংলাদেশ মিশনে গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে আল্লাহ, ইসলাম, মহানবী (সা.) ও নারীর পর্দা নিয়ে মন্তব্য করেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। ওই বক্তব্যের পর প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশীরা। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা।
রবিবার জ্যামাইকার তাজমহল পার্টি হলে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে এমন খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হন প্রবাসী আলেম সমাজ ও সাধারণ মানুষ। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ।
প্রতিবাদের মুখে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর সংবর্ধনার স্থান পরিবর্তন করেন আয়োজকরা। আয়োজকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘গাফ্ফার চৌধুরী অসুস্থ হওয়ায় তিনি অনুষ্ঠানে আসছেন না। ব্রুকলিনের সভায় অংশ নেবেন।’
এ বিষয়ে তাজমহল পার্টি হলের অন্যতম মালিক মাসুম খান বলেন, ‘দেখুন আমরা ব্যবসা করতে বসেছি। কোনো রাজনীতি করতে না। আজকের অনুষ্ঠানকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থেকেই আমরা অনুষ্ঠান বাতিল করেছি। আয়োজকদের আমরা জানিয়ে দিয়েছি আগে বুকিং করা হলেও আমরা অনুষ্ঠান করতে দিতে পারছি না।’
ব্রুকলিনেও প্রতিবাদ
বাংলাদেশী অধ্যুষিত কুইন্সের জ্যামাইকার পার্টি হল ছেড়ে বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রুকলিনের চার্চ ম্যাকডোনাল্ডসের ৪৯০ নম্বর ভবনে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে সংবর্ধনা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজনও স্থানীয়দের প্রতিবাদে পণ্ড হয়ে যায়।
সেখানে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী পৌঁছলে তাকে জুতা প্রদর্শন করেন স্থানীয়রা। এ সময় গাফ্ফার চৌধুরী একটি গাড়িতে বসেছিলেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেখানে উপস্থিত হন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান।
প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি। ধর্মকে অসম্মান করা আমাদের কাজ নয়। যারা আওয়ামী লীগের নামে আলোচনা সভা ডেকে জ্যামাইকার তাজমহল আর ব্রুকলিনে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করল তারা কারা? তাদের চিহ্নিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে পবিত্র হজ আর ইসলাম সম্পর্কে কথা বলায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি কাছের মানুষ আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছে ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেখানে আল্লাহ ও ধর্ম নিয়ে কেউ কথা বললে তার পক্ষে আওয়ামী লীগ কেন থাকবে?’
‘আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তেমন কিছু বলে থাকলে তা খতিয়ে দেখে আমরা পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেব’- বলেন ড. সিদ্দিকুর রহমান।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের অনুষ্ঠান যারা আয়োজন করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি।
আমি বড় মুসলমান : আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
জ্যামাইকার অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগেই ম্যানহাটনে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধির বাসায় নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত টাইম টেলিভিশনে ৩ জুলাই নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী।
তিনি দাবি করেন, ‘না বুঝেই আমার একাডেমিক বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। ওই দিনের বক্তব্যে আমি ইসলামবিরোধী কোনো কথা বলিনি। একাডেমিক সেমিনারে আমি আমার বক্তব্য ব্যাখ্যা দিয়ে বলার চেষ্টা করেছি। বিএনপি-জামায়াতিরা আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে।’
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর দাবি, ‘যারা আমার বক্তব্যের বিরোধিতা করছেন তারা পুরো বক্তব্য না শুনেই ভুল বলছেন।’
‘যারা আমার বক্তব্য না বুঝে প্রতিবাদ করে তাদের চেয়েও বড় মুসলমান আমি’- দাবি করেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী।সৌজন্যেঃ দ্য রিপোর্ট
https://youtu.be/UDA-Zl759T4
মন্তব্য চালু নেই