আবার প্রমাণিত হলো আ’লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : সিপিবি-বাসদ

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সিটি করপোরেশন নির্বাচন ‘ঘৃণাভরে’ প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

দল দু’টি মনে করে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় তা আবার প্রমাণিত হল।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মৈত্রী মিলনায়তনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেয় দল দুটি।

একই সঙ্গে সিপিবি-বাসদ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগও দাবি করেছে।

সিপিবি-বাসদের প্রার্থীরা বলেন, এই নির্বাচন অতীতের ভোট কারচুপির সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বলেন, ‘৫ জানুয়ারি নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন। আর ২৮ এপ্রিলের সিটি করপোরেশন গায়ের জোরের নির্বাচন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা এই নির্বাচনে সেন্টারে টিকে থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলছি, এই নির্বাচনকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা তাদের বিরোধী সকল দলের পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে সিটি করপোরেশন দখল করে নিল। এই নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন। এই নির্বাচন জনগণ মানে না। এই নির্বাচনের মাধ্যমে রক্তে অর্জিত গণতন্ত্র নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে।’

সৈয়দ আবু জাফর আরও বলেন, ‘প্রথমে নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন, এখন গায়ের জোরে নির্বাচন হল। দীর্ঘদিনের গণতন্ত্রের সংগ্রাম নির্বাসিত হয়ে গেল। পাকিস্তান আমল থেকে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে, স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধেও গণতন্ত্রের জন্য এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে। কিন্তু এখন দেশে আর গণতন্ত্র রইল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতো মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন আমি আর দেখিনি। আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশনকেও এই নির্বাচন কমিশনার লজ্জা দিয়েছে। পুলিশ-র‌্যাব দলীয় কর্মীর ভূমিকায় ছিল। এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।’

আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী যে চেহারা জনগণ দেখলো তাতে জনগণকে কঠিন কঠোর সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে বলে মন্তব্য করেন সৈয়দ আবু জাফর আহমদ।

সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণের সিপিবি-বাসদ সমর্থিত দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক মারা হলো। জালভোটের জন্য পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামানের কাছে অভিযোগ করেছি। তিনি আমায় বললেন, এটা দেখার দায়িত্ব না। এটা প্রিসাইডিং অফিসারের দেখার বিষয়।’

বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা প্রমাণ হল। আমরা এই মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করছি।’

উত্তরের সিপিবি-বাসদ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল ক্বাফী বলেন, ‘যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও পুলিশ যেভাবে ভোট কেন্দ্রে পাহারা বসিয়েছিল, তাতে অন্য প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী কেন্দ্রে যাওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছিল। পুলিশের যে আচরণ তাতে তাদের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী মনে হয়নি। তাদের দলীয় কর্মীর মতো মনে হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, সাজ্জাদ জহির চন্দন, ইঞ্জিনিয়ার শম্পা বসু, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি নেত্রী জলি তালুকদার প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই