আপনার সঙ্গীটি স্যাডিস্ট নয় তো?

স্যাডিস্ট শব্দটির সঙ্গে আপনি হয়ত পরিচিত। মানুষের ক্ষতি করে আনন্দ পায় এবং মানুষ কষ্টে আছে এটাই তাদের সুখানুভূতির মূল উৎস। আপনি হয়ত ভাবছেন এধরণের মানুষ আপনার আশেপাশে নেই বা থাকলেও তাদের সংখ্যা খুবই কম। আসলে তা নয়। একজন স্যাডিস্ট বন্ধুর বেশে আপনার পাশে দাঁড়িয়ে হাসি মুখে আপনার ক্ষতি করে যেতে পারে।

University of Massachusetts Amherst এর মনোবিজ্ঞান এবং মস্তিষ্ক বিজ্ঞান বিষয়ক প্রফেসর Susan Krauss Whitbourne, Ph.D. এর লেখনী থেকে জেনে নেব আরও বিস্তারিত। তিনি বলেন-

মনোবিজ্ঞানীরা মানুষের ব্যক্তিত্বের এই বৈশিষ্ঠ্যকে বলেন “the dark triad”। এটি নার্সিজম, সাইকোপ্যাথি এবং ম্যাকিয়াভেলিয়ানিজমের সমন্বয়। ডার্ক ট্রেইড এ আছেন এমন মানুষেরা অন্যদের ব্যবহার করেন নিজের সুবিধার্থে। মানুষকে তারা বিবেচনা করেন যন্ত্রপাতির মত, নিজের প্রয়োজনমত কাজে লাগান এবং প্রয়োজন শেষ হয়ে এলে জীবন থেকে দূরে ঠেলে দেন।

দীর্ঘসূত্রিতায় একজপ্ন স্যাডিস্ট খুনী হতে পারেন, ধর্ষক হতে পারেন। অথবা অন্যের খুন করা বা ধর্ষণ করা বা এজাতীয় কাজ থেকে আনন্দ লাভ করতে পারেন।

কিন্তু দৈনন্দিন জীবনেও একজন স্যাডিস্টের আনন্দ লাভের নানান উপায় থাকে। বিভিন্নভাবে সে অন্যকে ঝামেলায় ফেলে এবং তার প্রতিক্রিয়া থেকে আনন্দ পায়। তার এই মানসিক বিকৃতির প্রভাব পড়ে তার প্রিয়জনদের উপরেও। যৌণজীবনে সঙ্গীকে আর্তনাদ করতে দেখে সে আনন্দ লাভ করে। এমনকি দেখা যায় অনেক স্যাডিস্ট যৌণক্রিয়ার সময় মারধর করতে পছন্দ করেন। সঙ্গী অসুস্থ হলে তাকে কষ্ট দিয়ে যোণক্রিয়া চালিয়ে যান।

কিভাবে বুঝবেন এই ভয়ঙ্কর ব্যক্তিত্বের মানুষ আপনার আশেপাশেই আছে কিনা? মানুষটি হয়ত বন্ধু সেজেই আপনার ক্ষতি করে যাচ্ছেন। তিনি আপনাকে ঝামেলায় ফেলছেন আর আপনি হয়ত তারই উপকার করতে ছুটে যাচ্ছেন বার বার।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী এরিন বাকেলস এবং তার কলাবরেটররা ২০১৩ সালে দৈনন্দিন জীবনে স্যাডিস্টদের চিনবার জন্য বিভিন্ন গবেষণা চালান। ল্যাবরেটোরিতে বিভিন্ন মানুষের আচরণ গবেষণা করে তারা স্যাডিস্টদের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এই সিদ্ধান্তে আসেন-

১। একজন স্যাডিস্ট মানুষকে ব্যাথা পেতে দেখেও খুশী হন।
২। তিনি মানুষকে শারীরিকভাবে, যৌণক্রিয়া দ্বারা অথবা মানসিকভাবে পীড়া দিয়ে আনন্দলাভ করেন।
৩। মানুষকে আঘাত করার কল্পনাও তাকে এক্সাইটেড করে।
৪। এই আহত করা বা আঘাত করার পেছনে তার বৈষয়িক কোন লাভ নাও থাকতে পারে। শুধু আনন্দ পাওয়ার জন্যই তিনি অপরের ক্ষতি করতে পারেন।
৫। তিনি সারাক্ষণ অন্যের ক্ষতি করার বা অন্যকে ঝামেলায় ফেলার উপায় খুঁজতে থাকেন।
৬। তিনি আঘাত করেন কারণ তিনি আঘাত করতে পারেন।
৭। তিনি মনে করেন, এভাবেই তিনি সবাইকে সটিক পথে রাখছেন।
৮। তার সঙ্গী যখন অসুস্থ তখন তার যৌণ আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়ে ওঠে।

এধরণের মানুষ খুবই চতুর হয়। বুঝতে পারা মাত্র তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। স্যাডিস্ট মানুষ আপনার যতই আপন হন না কেন তিনি কখনোই উপকারি বন্ধু নন। সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হল, বেশীরভাগক্ষেত্রে তারা না জেনেই অন্যের ক্ষতি করতে থাকেন।



মন্তব্য চালু নেই