আপনার শরীরকে ডিটক্স করার সহজ কিছু উপায়

আপনি কি আলস্য অনুভব করছেন বা কোন কিছুই সংগত মনে করছেননা? ত্বকের সমস্যা, ব্যাথা বেদনা অনুভব করছেন অথবা হজমের সমস্যায় ভুগছেন? ওজন কমাতে পারছেননা? তাহলে আপনার শরীরকে বিষমুক্ত করা প্রয়োজন। আয়ুর্বেদিক ও চাইনিজ কিছু পদ্ধতিতে যেমন- বিশ্রাম নেয়া, শরীরের ভেতরটা পরিষ্কার করা ও সঠিক পুষ্টি প্রদান করা ইত্যাদির মাধ্যমে শরীরকে বিষমুক্ত করা যায় যা সারা বিশ্বে বহুকাল যাবত অনুসরণ করা হচ্ছে। শরীরকে বিষমুক্ত করলে রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং পুনরায় সর্বোত্তম স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা যায়। খাদ্য ও পরিবেশ থেকে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন বিষ আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে। বিষমুক্ত করা বেশ জটিল বলে মন্তব্য করেন Detoxification বইটির লেখক Linda Page। তিনি কিছু লক্ষণের কথা বলেন যা দেখে শরীরের বিষাক্ততা আছে অনুমান করা যায়। লক্ষণ গুলো হল- বর্ণনাতীত অবসাদ, আলস্য, যন্ত্রণাদায়ক ত্বক, অ্যালার্জি, নিম্ন মাত্রার ইনফেকশন, আই ব্যাগ হওয়া, পেট ফাঁপা, পিরিয়ডে সমস্যা ও মানসিক দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগা ইত্যাদি।
কিভাবে শুরু করবেন?

প্রথমেই বিষাক্ত জিনিষ গ্রহণ করা কমাতে হবে। অ্যালকোহল, কফি, সিগারেট, পরিশোধিত চিনি এবং সম্পৃক্ত চর্বি গ্রহণ বাদ দিন। কারণ এগুলো বিষের মতই কাজ করে এবং নিরাময় প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে। এছাড়াও কেমিক্যাল বেইজড ক্লিনার ব্যবহার কমিয়ে দিন, ব্যাক্তিগত কিছু সামগ্রি যেমন- ক্লিঞ্জার, শ্যাম্পু, ডিউডোরেন্ট, ও টুথপেস্ট ইত্যাদির প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন। এছাড়াও স্ট্রেসের কারণেও শরীরের বিষাক্ততা বৃদ্ধি পায়। তাই স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণের জন্য ইয়োগা ও মেডিটেশন করুন।

শরীরকে বিষ মুক্ত করার জন্য আর যে কাজ গুলো করা প্রয়োজন তা হল-

১। চিনি খাওয়া কমিয়ে দিন

Mirbeau Inn & Spa এর পরিচালক Matt Dower বলেন, “শরীরকে বিষ মুক্ত করার কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে সিজনাল ডিটক্স যা মেটাবোলিজম এর গতি বাড়ায় এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এটা শুরু করতে পারেন চিনি গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে”।

২। দিনের শুরুতে লেবু-পানি পান করুন

Dower আরো বলেন, “লেবু অন্ত্রকে জলীয় অংশ শোষণে সাহায্য করে ও হজমের উন্নতি করে, যা শরীর থেকে বর্জ্য নিষ্কাশনে সহায়তা করে”। সকালে বড় এক গ্লাস পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করার পরামর্শ দেন তিনি।

৩। অরগানিক ফুড গ্রহণ করুন

কিছু ফল আছে যাদের মধ্যে অন্য ফলের তুলনায় অনেক বেশি পরিমানে পেস্টিসাইড ও প্রিসারভেটিভ আশ্রয় গ্রহণ করে। এই রকম ফলমূল গুলো যেমন- স্ট্রবেরি, টম্যাটো ও আপেল অরগানিক কিনা দেখে কিনা উচিত। ডিটক্সিফিকেশনের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে অরগানিক ফল খাওয়া।

৪। ম্যাসাজ

শরীর ম্যাসাজ করা রিলাক্সেশন ও ডিটক্সিফিকেশনের ভালো একটি মাধ্যম। আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রেশার পয়েন্টে টক্সিন তৈরি হয়। যেমন- আমাদের মাথার দুই পাশে চোখ ও কানের মাঝামাঝি ছোট ও চ্যাপ্টা স্থানকে টেম্পল বলে যা একটি প্রেশার পয়েন্ট। এই স্থান গুলোতে ম্যাসাজ করলে টক্সিন হ্রাস পায়।

৫। এক্সারসাইজ

নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত ও লসিকার চলাচল অনুপ্রাণিত হয়। এছাড়াও হজমের উন্নতি হয়, টেনশন কমে, জয়েন্টকে মসৃণ করে এবং শরীরকে শক্তিশালী করে। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের শরীরে অন্যদের তুলনায় কম টক্সিন থাকে।

৬। প্রচুর পানি পান করুন

পানি প্রাকৃতিক ভাবে শরীর থেকে টক্সিন বাহির করে দেয়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন।

৭। উপবাস করুন

শরীরকে বিষ মুক্ত করতে মাসে ১-২ দিন উপবাস করুন। এতে শরীর বিষমুক্ত হওয়ার পাশাপাশি হজমও ভালো হবে। উপবাসের পর প্রচুর ফল ও সবজি খান তারপর অন্য খাবার খান।

এছাড়াও ডিটক্সিফিকেশনের জন্য নিয়মিত ৬-৭ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন, প্রচুর পানি পান করা প্রয়োজন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য, ব্রাউন রাইস, ভিটামিন সি ও তাজা ফল ও সবজি গ্রহণ করা প্রয়োজন। ষ্টীম বাথ নিলে ও এক্সফলিয়েট করলে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে টক্সিন বাহির হয়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই