আজ পর্দা উঠছে কমনওয়েলথ গেমসের, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু প্রতিযোগিতা

খুব বর্ণিল ও জাঁকাল কোন উদ্বোধনীর আয়োজন থাকছে বিষয়টি এমন নয়। ‘কুইন্স ব্যাটন রিলে’ দিয়ে শুরুর পর ৭১ দেশের অংশগ্রহণকারী এ্যাথলেটদের প্যারেড হতেই সময় পেরিয়ে যাবে। আর এসব কারণেই কমনওয়েলথ গেমসের উদ্বোধনীর দিনটাতে কোন ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থাকে না। এবার ২০তম আসরের পর্দা উঠবে আজ। আয়োজক স্কটল্যান্ডের মূল দুই ভেন্যু সেল্টিক পার্ক ও হ্যাম্পডেন পার্ক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে সেল্টিকে। এ দুটি জায়গায় ক্লাইড নদীর তীরে অবস্থিত মনোরম পরিবেশ। এবারের আয়োজনে ১৭ ক্রীড়ার ২৬১ ইভেন্টে মোট ৪ হাজার ৯০০ এ্যাথলেট অংশ নেবে। মূল প্রতিযোগিতার আকর্ষণ বাড়ানোর সবচেয়ে বড় উপলক্ষ আর চমক থাকছে উদ্বোধনী দিনেই। এদিন ইউরোপের সর্ববৃহৎ এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিনে প্রদর্শিত হবে উদ্বোধনী আসরটি। আর এর মাধ্যমেই এবার জনতা, অবস্থান ও অনুরাগ এই সেøাগান নিয়ে আবার শুরু কমনওয়েলথ গেমস। আর এ আসরটির মূল কথা মানবতা, সমতা ও নিয়তি তো আছেই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসবের প্রতিকী উপস্থাপনার পাশাপাশি থাকবে স্কটিশ সঙ্গীতের মূর্চ্ছনা।
সেল্টিক পার্কের দক্ষিণ গ্যালারির নাম ইতোমধ্যেই স্কটিশরা এবং গেমস উপলক্ষে আগতরা নাম দিয়েছেন, ‘কমনওয়েলথের জানালা’ হিসেবে। কারণ এখানেই স্থাপিত হয়েছে অভিনব দৈত্যাকার একটি এলইডি স্ক্রিন। এর উচ্চতা ১১ মিটার আর প্রস্থ ১০০ মিটার। এত বিশালাকৃতির একটি স্ক্রিন দর্শকদের এবং বিশ্বব্যাপী যারা টিভিতে বসে গ্লাসগোর এ মহাযজ্ঞ উপভোগ করবেন সকলকেই করবে অভিভূত। এত বড় স্ক্রিন ইউরোপের ইতিহাসে আর কোথাও দেখা যায়নি। এই টিভি স্ক্রিনকে একইসঙ্গে সংযোগ করা হয়েছে পুরো মাঠের বিভিন্ন জায়গায় এবং পুরো শহরের বিভিন্ন স্থানে সংস্থাপিত ক্যামেরার সঙ্গে। যার ফলে একই স্ক্রিনে যুগপৎভাবে কমনওয়েলথ গেমস ভিলেজে এবং শহরের আনাচে-কানাচে কি ঘটছে সেসব উপভোগ করা সম্ভব হবে। আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত, জীবন্ত আর বিস্ময়করভাবে উপস্থাপনে সক্ষম হবে এ দৈত্যাকৃতির স্ক্রিনটি। সবমিলিয়ে ৩৮ টন ওজনের স্ক্রিন এটি। একইসঙ্গে ১০২০ বর্গমিটার কাভার করবে এ জায়ান্ট স্ক্রিনটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং গেমস বোর্ডের স্বতন্ত্র পরিচালক এইলিন গ্যালাহের বেশ উত্তেজনা বোধ করছেন এবং উচ্ছ্বসিতও। তিনি বলেন, ‘আকর্ষণীয় কমনওয়েলথ গেমসে বিশ্ববাসীকে সাদরে অভিবাদন জানাতে গ্লাসগো এবং স্কটল্যান্ডের জন্য দারুণ একটা সুযোগ। আমাদের সুশৃঙ্খল ও উষ্ণ মনোভাব, শৈল্পিকতা ও সৃষ্টিশীলতা প্রদর্শনেরও দারুণ সুযোগ। কমনওয়েলথের জানালা বসানো হয়েছে সেল্টিক পার্ককে দারুণ মনোমুগ্ধকর হিসেবে মানুষের কাছে উপস্থাপন করার জন্য। আমার ধারণা সবাই একটি বিশেষ সন্ধ্যা উপহার পাবেন। আয়োজক শহরের মাধ্যমে আমরা স্কটল্যান্ডকে বিশ্বের সামনে বেশ কয়েকটি চমকের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে সক্ষম হব বলে আশা করি।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সবমিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার দর্শক সেল্টিক পার্কের গ্যালারিতে বসে সরাসরি উপভোগের সুযোগ পাবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছে ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। প্যারেডে স্বাগতিক দেশের পতাকা বহন করবেন জুডো কিংবদন্তি ইউয়ান বার্টন। আর গত ৬ বারের সেরা দল অস্ট্রেলিয়ার পতাকা থাকবে চার কমনওয়েলথ গেমস ও একটি অলিম্পিক স্বর্ণজয়ী সাবেক সাইক্লিস্ট এ্যানা মিয়ার্সের হাতে। এর আগেও স্কটল্যান্ড দু’বার (১৯৭০ ও ১৯৮৬) এ আসর আয়োজন করেছে এডিনবার্গে। এবার প্রথমবারের মতো গ্লাসগোয় হতে যাচ্ছে আসরটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্কটিশ সঙ্গীতের জনপ্রিয় তারকা রড স্টুয়ার্ট, সুসান বয়েল ও এ্যামি ম্যাকডোনাল্ড মঞ্চে গেয়ে সুরের আবেগী জালে আবদ্ধ করবেন। উদ্বোধনীর প্রধান ডেভিড জোকওয়ের জানিয়েছেন স্কটল্যান্ডের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও উপস্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যেই রানী এলিজাবেথের হাতে লেখা বার্তা নিয়ে গেমসের বিশেষ ব্যাটনটি ২৮৮ দিনের বিশ্বভ্রমণে সব অংশগ্রহণকারী দেশে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কিলোমিটার পথ প্রদক্ষিণ করে গ্লাসগোয় এসেছে। আর রানী এলিজাবেথ নিজেই সেই বার্তাটি পাঠ করে এবারের আসরটির উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।



মন্তব্য চালু নেই