আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে…

আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে

জানি নে, জানি নে

কিছুতেই কেন যে মন লাগে না….

হঠাৎ, নাতো হঠাৎ নয়। সকাল থেকেই তার মুখটা বেশ ভার ছিল। অন্যান্য দিনের মতো আজও ব্যস্ততার অভাব ছিল না। তাইতো সেদিকে খেয়াল করার সময় নেই এতোটুকু। কিন্তু আপনার সেই শতব্যস্ততার কাজের রেলে বাধ সেধে বসলো চঞ্চলা মেঘমতি। ঝুপ ঝুপ করে ঝরে লুটোপুটি খেলা। আগমনেও ছিল দুষ্টুমির ছাপ। আচমকা চারপাশের পরিবেশকে অন্ধকার আবেশে জড়িয়ে ধরা। মেঘে মেঘে বিদ্যুতের চমকানি মনের মাঝেই তার প্রতি গুরুত্ব সৃষ্টি করা আর কি।

আপনি যতই কঠিন কাঠ হোন না কেন, বৃষ্টির সময় জানালার ফাঁক দিয়ে হাত বাড়ানোর সময় একটুও কার্পণ্য হয়নি। এমন বারি মুখর দিনে কোনো কাজে কি আর মন ধরে রাখা যায়?

বৃষ্টির ছোঁয়া, তুলো মেঘের শিলারূপ স্পর্শ, একে অন্যের সঙ্গে দুষ্টুমি সবই হতে পারে এমন বৃষ্টিতে। তবে যা-ই করুন না কেন, মনে রাখতে হবে অনভ্যাসে বৃষ্টি ছোঁয়া।

বৃষ্টির পানিতে, শিলা কুড়াতে বা যেভাবেই ভিজে যান না কেন বাসায় এসে দ্রুত পরণের কাপড় বদলে নিতে হবে। হাত পায়ের ময়লা পরিষ্কার করে ধুয়ে অলিভঅয়েল বা লোশন মেখে নিন। বৃষ্টির পানি এমনিতেই খুব ঠাণ্ডা- তাই পরে নিতে হবে গরম কাপড়। মাথার চুল ভালো করে মুছে নিতে হবে, নইলে সর্দি জ্বর হতে দেরি হবে না একটুও। তাছাড়া এখন থেকে ব্যাগে একটা ছাতাও রাখা চাই। কখন দেখা গেল হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দিয়ে গেল জরুরি সময়ে।

তবে যাই বলুন,

এই চঞ্চল সজল পবন-বেগে

উদ্ভ্রান্ত মেঘে মন চায়

মন চায় ঐ বলাকার পথখানি নিতে চিনে….

এমন দিনে কাছের মানুষকে আরও আপন করে পেতে ইচ্ছা করে। বাতাসের উচ্ছ্বল নৃত্যে নিজের অঙ্গ দুলে ওঠে আনমনেই। আর টিনের চালে বৃষ্টির ফোঁটা সেতো রোমান্সেরই অপর নাম। ঝুম বৃষ্টিতে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তেপান্তরের মাঠে বন্ধুর হাত ধরে ঘোরার স্মৃতিও কড়া নাড়ে। কত্তো রকম কল্পনা এসে ভিড় করে মনের আকাশে। সাদা বলাকার মতো পাখা মেলে উড়তে চাই মন। ইচ্ছে করে অজানায় হারিয়ে যায়, যে দিগন্তে আকাশ এসে চুপিসারে চুম্বনরত।

মেঘমল্লারে সারা দিনমান

বাজে ঝরনার গান, বাজে ঝরনারও গান….

আজ গলা ছেড়ে গাইতে আর মানা নেই। মন খুলে কথা বলতেও মানা নেই। বৃষ্টি ধোয়া আকাশটাকে আপন করে পেতেও মানা নেই। শান্ত শীতল পরিবেশে আপন মানুষের উষ্ণ নিঃশ্বাস- সেতো পরম আরাধ্য।

মন হারাবার আজি বেলা

পথ ভুলিবার খেলা

মন চায় …মন চায়

হৃদয় জড়াতে কারো চির -ঋণে…



মন্তব্য চালু নেই