আগে খাতা ওজন করে নম্বর দেয়া হতো : শিক্ষামন্ত্রী

আগে পাবলিক পরীক্ষার খাতা ‍ওজন করে নম্বর দেয়া হতো বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, শিক্ষকরা ভাল করে খাতা দেখতেন না। তারা অনুমান করে খাতায় নম্বর দিতেন, যদিও সেভাবে তাদের দিক নির্দেশনা দেয়া হতো না।

রবিবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। উচ্চ মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্প ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন মন্ত্রী।

চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার আগের বছরের তুলনায় কমেছে প্রায় আট শতাংশ। বৃহস্পতিবার পরীক্ষার ফল ঘোষণার দিন শিক্ষামন্ত্রী জানান, খাতা দেখায় নতুন নীতিমালার কারণে এবার পাসের হার কমেছে। আর এতে কাউকে বিস্মিত না হতে পরামর্শও দেন তিনি। সেদিন তিনি বলেন, ‘ফলাফলে কেউ যেন বিস্মিত না হন, এটা আমাদের জন্য স্বাভাবিক, আমরা ওই জায়গায় যেতে চেয়েছি যে সঠিক মূল্যায়ন করা।’

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে জিপিএ ফাইভ পাওয়ার সংখ্যা। শুরু থেকেই অভিযোগ উঠে অতি উদারভাবে নম্বর দেয়ায় এই ঘটনা ঘটছে। তবে সরকার কোনো ধরনের নির্দেশনা দেয়ার কথা অস্বীকার করেছে এতদিন।

তবে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে উল্টোসুর। আজও সচিবালয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তিন বছর গবেষণা করে তা সঠিকভাবে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করেছি। এখন সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়ন হচ্ছে।’

মন্ত্রী বলেন, উপবৃত্তির ফলে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশিত নারী শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আগে দেখা গেছে মেয়েরা স্কুলে গেলে সমাজের মানুষ এটাকে গুনাহ্ মনে করতো। এখন আর সেই অবস্থা নেই। নারীরা স্কুলে যাবে, শিক্ষা গ্রহণ করবে এটা সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০১৪ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বৃত্তি প্রদান প্রকল্প এবছর শেষ হবে। কিন্তু তা একেবারে বন্ধ হবে না। যেকোন উপায়ে এই প্রকল্প চলবে। এই প্রকল্পের টাকা কোন বিদেশি সহায়তা নয় বরং সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এই বৃত্তি প্রকল্প চালাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘এই বৃত্তি চালুর পর নারী শিক্ষার্থীদের মাঝে নম্বর প্রাপ্তিতে প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে। ক্লাসে উপস্থিতি বেড়েছে। বাল্য বিবাহ কমেছে।’

নাহিদ বলেন, ‘আমি যখন প্রাইমেরিতে পড়তাম তখন একজনও মেয়ে শিক্ষার্থীও আমার ক্লাসে পড়তো না, বর্তমানে সরকারের এমন উদ্যোগের কারণে সেই অবস্থা এখন নেই। এখন মোট শিক্ষার্থীর শতকরা ৫৩ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী ক্লাসে অংশগ্রহণ করে। এটা বর্তমান সরকারের বড় অর্জন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘টেলিটক দেশের অন্যান্য মোবাইল কোম্পানির মতো ব্যবসানির্ভর নয়, টেলিটক হলো সেবা প্রদানকারী মোবাইল অপারেটর। টেলিটককে নিজের পায়ে দাঁড় করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। টেলিটকের মাধ্যমে দেশের কয়েক লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি পেতে সহায়তা করতে পেরে আমরা গর্বিত।’

ছাত্র ছাত্রীদের জন্য টেলিটকের এই সেবার মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকার তথ্য সরাসরি তাদের মোবাইলে পৌছে যাবে। উপবৃত্তি নিয়ে ঘটে যাওয়া বিগত সময়ে নানা দুর্নীতিও বন্ধ হবে বলে জানান সভায় উপস্থিত বক্তারা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ আলমগীর, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই