‘আওয়ামী লীগ-জামাত ঐক্য সময়ের ব্যাপার মাত্র’

“আওয়ামী লীগ-জামাত ঐক্য সময়ের ব্যাপার মাত্র” শিরোনামে সম্প্রতি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনি। স্ট্যাটাসটি এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো:

শিরোনামটির কথা আমার মনে আসলো একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাস দেখার পর। দেশের সর্বাধিক প্রচারিত জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক নঈম নিজাম মনের দুঃখে স্ট্যাটাসটি দিয়েছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং জামাত সমর্থিত সাংবাদিকরা ঐক্য করায় জনাব নঈম সম্ভবত নিদারুন কষ্ট পেয়েছেন। তার কষ্টটি নিঃসন্দেহে নিদারুন ছিলো কারণ তিনি ইতিপূর্বে কোনদিন কোন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে অন্যসব সাংবাদিকের মতো একচোখা লেখালেখি করেননি- কোন টকশোতে বক্তব্য দেননি এবং ফেইসবুক স্ট্যাটাস তো নয়ই। পরস্পর বিরোধী দু’টো রাজনৈতিক সংগঠনের মেধাভিত্তিক গ্রুপগুলোর হঠাৎ ঐক্য দেখে তিনি দুঃখিত এবং বিস্মিত হলেও আমি হইনি।

জনাব নঈম কেনো দুঃখ পেলেন তা আমার মাথায় ঢুকছে না। তার নিশ্চয়ই জানা উচিত ছিলো পর্দার অন্তরালের কিছু ভয়াবহ রাজনৈতিক খেলাধুলা সম্পর্কে। বিএনপির সবচেয়ে প্রভাবশালী এক নেতার বাসায় কবে কখন আওয়ামী লীগ ও জামাতের শীর্ষ নেতারা দাওয়াত খেয়েছিলো – তার খবর আমার আগে তারইতো জানার কথা। এর বাইরে আওয়ামী লীগের একজন বিতর্কিত এবং নিন্দিত ব্যবসায়ী নেতা বিএনপির অন্দরমহলের আরেক নেতার যোগসাজসে কিরূপে জামাতকে বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় সেই প্রকল্পের আদিকথা তো অনেকেই জানে।

অনেকে হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন- এটা কি করে সম্ভব ! বিশেষ করে দু’টো রাজনৈতিক দল যেখানে গত ৭/৮টি বছর ধরে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ছে এবং একটির দ্বারা আক্রান্ত হয়ে অপরটি ক্ষত বিক্ষতের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে! এই অবস্থায় মিলন কি করে সম্ভব? এমনতরো প্রশ্নকর্তাদেরকে বলবো প্রাচীন ভারতীয় কামশাস্ত্র পড়ার জন্য। কামশাস্ত্রের ইতিহাস বলে- মধুময় মিলনের পূর্বে মিলন প্রত্যাশীরা একজন অপরজনকে বেদম প্রহার করতো- প্রচণ্ডভাবে আঘাত করতো-তারপর মিলনের জন্য উদগত হতো। মারামারিতে বিজয়ী পক্ষ উদগত হতো এবং আপাত পরাজিত পক্ষ সমর্পিত হয়ে নির্গত নির্যাসের সুধা উপভোগ করতো।

যারা প্রশ্ন করবেন – কেনো এমনটি হবে বা হয় ? এর উত্তরে বলবো – প্রকৃতিতে প্রাণীর পচন শুরু হয় মাথায় এবং শেষ হয় পাছায়। জাতীয় প্রেসক্লাবে যা শুরু হলো তার সম্প্রসারিত অংশ দেখা যাবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে। এরপর অন্যসব সেক্টরে। তারপর লোকজন অভ্যস্থ হয়ে গেলে যবনিকার অবসান হবে এবং নতুন কিরনে দেশবাসী উদ্ভাসিত হয়ে যাবে। সময়ের প্রয়োজনে উভয় পক্ষই যেনো একে অপরের জন্য অপরিহার্য্য হয়ে পড়েছে। এক পক্ষের অস্তিত্ব সংকট এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নিন্দিত ভূমিকা থেকে বের হয়ে আসার অদম্য আকাংখ্যা। অপরদিকে অন্যপক্ষের স্বার্থ রয়েছে তাদের চির প্রতীদ্বন্দ্বী বিএনপিকে জামাতবিহীন করে সমুলে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবার উদগ্র বাসনা। সেই সঙ্গে নিজেদের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতাও নাস্তিকতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবার নিন্দাকারীদের মুখ বন্ধ করার মোক্ষম সুযোগ।



মন্তব্য চালু নেই