আইসিসি চেয়ারম্যানের পদ হারাচ্ছেন শ্রীনি !
শেষ কবে কোনো ভালো খবরের জন্য শিরোনাম হয়েছিলেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন সে কথা হয়তো নিজেও ভুলে গেছেন তিনি। একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত, বোর্ড এবং আইসিসিতে নিজের অন্যায় আধিপত্য বিস্তার, দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার জন্য বারবার আলোচনায় আসেন তিনি। সম্প্রতি বিভিন্ন ভারতীয় মাধ্যম তাদের নিজস্ব সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে, বিতর্কিত শ্রীনিকে আইসিসি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরাতে তৎপর হয়ে উঠেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। সূত্রগুলো জানিয়েছে যে আগামী মে মাসের ২৪ তারিখে বোর্ড একটি বিশেষ সাধারণ সভা আহ্বান করেছে। সেখানে আলোচনার মূল বিষয়ই হবে শ্রীনিকে আইসিসিতে রাখা হবে কি না।
বিসিসিআই সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শ্রীনিবাসনের সঙ্গে তার বিরোধ একরকম প্রকাশ্য। শ্রীনির পছন্দের কোনো প্রার্থীকেই বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখেননি ডালমিয়া। আইপিএল চেয়ারম্যান পদে শ্রীনিবাসনের লোক সঞ্জীব বিসওয়ালকে সরিয়ে বসিয়েছেন শ্রীনি-বিরোধী রাজীব শুক্লাকে। বিশেষ সাধারণ সভায় শ্রীনিকে অপসারণ করতে হলে বোর্ডের দুই-তৃতীয়াংশ নীতি নির্ধারকদের ভোট লাগবে। সংখ্যার হিসেবে যা ২১টি। শোনা যাচ্ছে যে শ্রীনির বিপক্ষে ২১টি ভোট জোগাড় করতেই এখন উঠে পড়ে লেগেছেন ডালমিয়া এবং বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুর। এমনকি ২১টি ভোট নিশ্চিত না হলে বিশেষ সাধারণ সভাটি নাও আহ্বান করা হতে পারে।
সম্প্রতি একটি খবর ছড়িয়েছে যে বিসিসিআই সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে শ্রীনি লন্ডন ভিত্তিক একটি গুপ্তচর এজেন্সিকে ভাড়া করে। যেই এজেন্সির কাজ ছিল বোর্ডের বিভিন্ন সদস্যদের ওপর নজরদারি করা। বোর্ড কর্তাদের ভাবগতিক বুঝে সেটাকে নিজের সুবিধামতো প্রভাবিত করার জন্যই শ্রীনি এই আয়োজন করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর জন্য খরচ হওয়া প্রায় ১৪ কোটি রুপির পুরোটাই দেওয়া হয়েছিল বোর্ডের হিসাব থেকে। এই ঘটনা তদন্তে বিসিসিআই একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির প্রধান কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুরকে। অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গেও সম্পর্ক খুব একটা ভালো যাচ্ছে না শ্রীনির। ম্যাচ গড়াপেটায় অভিযুক্ত বুকিদের তালিকা চেয়ে ঠাকুর একটি অফিশিয়াল চিঠি পাঠিয়েছিলেন শ্রীনিকে। সেখানে সংশ্লিষ্ট ছিল শ্রীনি জামাতার নামও। বিরোধের সূত্রপাত সেখান থেকেই।
ক্ষমতার দাপট আর প্রভাব বিস্তার করে যতই শ্রীনি আইসিসির পদ আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করুন না কেন, তার পায়ের নিচ থেকে যে মাটি সরতে শুরু করেছে তা বুঝতে বাকি নেই আর কারও। সময়ই বলে দেবে কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ায়।
সূত্র: এনডিটিভি
মন্তব্য চালু নেই