অস্ত্রধারী সজিবের বহিষ্কারে “পুরস্কার” পাচ্ছেন ইবি প্রক্টর!

সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সজীবুল ইসলাম সজিবের অস্ত্র প্রশিক্ষণের ছবি সংবলিত খবর দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এ বিষয়টি ক্যাম্পাসসহ সারাদেশে ‘টক অব দা কান্ট্রি‘তে পরিণত হয়েছে। এরপর ছাত্রলীগ নেতা সজীবের অভিযোগ আমলে নিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করে। এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেশের বিভিন্ন মহল থেকে প্রশংসা কুড়ালেও প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বের বলির পাঠা‘য় পরিণত হচ্ছেন প্রক্টর ড. মাহবুব। সজিবকে বহিস্কার করায় প্রক্টর ড. মাহবুবকে পদত্যাগে বাধ্য করা হতে পারে বলে প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ অভিযোগ করে বলেন- সজিবের বহিস্কারের খবরে প্রক্টরের উপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন সজিবের মদদদাতা হিসেবে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান। তিনি ভিসি হওয়ার স্বপ্নে ছাত্রলীগকে নিয়ে খেলায় মেতেছেন। সজিবকে কেন বহিস্কার করা হলো? প্রশ্ন তুলে প্রক্টরকে পদত্যাগে চাপ প্রয়োগসহ তাকে পদত্যাগে বাধ্য করতে জরুরি সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গেছে।

ছাত্রলীগের একাংশ এবং উপ-উপাচার্যের পক্ষ থেকে প্রক্টর ড. মাহবুবকে জামাত-শিবিরের দালালসহ আওয়ামী লীগের মুখোশধারী বলে অভিযোগ করা হলেও বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরামের একাধিক প্রগতিশীল শিক্ষক জানান- ‘বর্তমান প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমান বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট থাকাকালীন জামাত-শিবিরের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুর ম্যূরাল স্থাপন করেন। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জআওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব নিরসন ও ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনেও ড. মাহবুবের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ ও অবস্থানের উপর জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেন।’ শিক্ষকরা আরো জানান-‘ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে প্রশাসনের একটি অংশ আজ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত একজনকে হেনস্থা করার পায়তারা করেছে। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের উপর জিরো টলারেন্স নীতি জারি করায় বহিরাগতরা প্রক্টরের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের ছায়ায় উঠে পড়ে লেগেছে।’

এবিষয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রুহুল কে এম সালেহ বলেন-‘প্রক্টর হিসেবে নয়, ড. মাহবুব বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একনিষ্ঠ সৈনিক। সে যদি কোন অন্যায় করে থাকে তাহলে পরিষদে বিচার দিতে হবে। কারো ব্যক্তিগত মতামতের উপর ভিত্তি করে যদি তাকে পদত্যাগ করানো হয়, তবে তা সকাল বিকালের রুটিন হিসেবে পরিণত হবে। এবিষয়ে ভিসিকে কখনো কোন রকম ছাড় দেব না।’

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ইবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ আসকারী বলেন-‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বিষয় নিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কোন ব্যক্তির পাশবিক চাপে যদি কোন অন্যায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তাহলে তার দায়ভার ভিসিকেই নিতে হবে।’

এব্যাপারে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বলেন-‘কারো সাথে আমার কোন দ্বন্দ্ব নেই। নিয়মনীতি অনুযায়ী ক্যাম্পাসের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’



মন্তব্য চালু নেই