অর্থের অভাবে কি উচ্চশিক্ষার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে এ প্লাস পাওয়া পাপিয়ার?
এসএম হাবিব, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতা পেলে আমি আমার মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারবো তাছাড়া সম্ভব নয়। সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য সহযোগীতা চেয়েছেন এ প্লাস পাওয়া পাপিয়ার মাতা মোমেনা বেগম। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এ সংবাদ ছাপা হলে পাপিয়ার মোবাইল ফোনে দেশ থেকে এবং বিদেশ থেকেও প্রবাসীরা সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তারা যদি আমার মেয়েকে পড়াশুনার জন্য একটু সহযোগীতা করে তাহলে আমার বাবা মরা মেয়েটার ভাল একটা কলেজে ভর্তি করায়ে লেখাপড়া করানো সম্ভব হবে।
২০১০ সালে মরণব্যাধী ক্যানসারে বাবা মারা গেছেন পাপিয়ার বাবা। জিপিএ-৫ পাওয়া তানিয়া জানান, পড়াশুনা বাদ দিয়ে বেচে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। সবাই যদি আমাকে সহযোগীতা করে তাহলে কষ্ট হলেওে আমি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবো অন্যথায় বেচে থাকা সম্ভব না। আমার মা অন্যের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে যা পান তা দিয়েই সংসার চলে । এত কষ্টের মাঝেও আমি হাল ছাড়িনি চেষ্টা করেছি। শত কষ্ট হলেও আমি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায় ।
শত অভাব-অনটনের মধ্যে স্বপ্ন দেখেন তিনি। পাপিয়ার স্বপ্ন- লেখাপড়া শিখে ফেলে আসা কষ্টের দিনগুলো মুছে দেয়া। মাকে বুড়ো বয়সে একটু শান্তি দেয়া। সেই স্বপ্নই আজ তাকে নিয়ে গেছে অনেক দূর। ২০১০ সালে বাবা ক্যানসারে মারা যাওয়ার পর ষষ্ঠ শ্রেণিতে তখন পাপিয়া। মা পরের বাড়িতে কাজ করেন। মা-মেয়ের সংসারে কষ্ট আর কষ্ট। একদিকে খাবার জোগাড় অন্যদিকে পাপিয়ার লেখাপড়া শেখার টাকা। এ অবস্থায়ও ভেঙে পড়েননি পাপিয়া। খেয়ে না খেয়ে লেখাপড়া করে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিয়ে-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাতঘরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন পাপিয়া। ইচ্ছা আর আন্তরিকতায় তার এ সফলতা। অর্থাভাবে প্রত্যান্ত পাড়াগাঁয়ের এই মেয়েটির সেই স্বপ্ন আজ যেন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। কারো সহযোগিতা পেলে পাপিয়ার সেই স্বপ্ন একদিন বাস্তবে রূপ নেবে। পাপিয়া রায়গ্রাম ইউনিয়নের জটারপাড়া গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের একমাত্র মেয়ে। তার এ সাফল্যে খুশি তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গ্রামবাসী।
বুধবার তার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সাবার মুখে মুখে পাপিয়ার নাম। কিন্তু অভাবের সংসারে মুখে হাসি নেই পাপিয়ার মা মমেনা বেগমের।
তার শঙ্কা- হয়তো অর্থের অভাবে মেয়ের উচ্চশিক্ষার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কি মেয়েকে স্বপ্ন দেখাতে পারবেন তিনি?
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, পাপিয়া অনেক মেধাবী। তার লেখাপড়ার জন্য স্কুল থেকে সহযোগিতা করা হতো। তাকে একটু সাহায্য করলে একদিন বড় কিছু করে দেখাতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
পাপিয়ার মা মমেনা বেগম বলেন, খুব কষ্ট করে বাবা মেয়েকে লেখাপড়া করিয়েছি। টাকার অভাবে ঠিকমতো পড়াতে পারিনি। আমার দুই ছেলে আলাদা থাকে। আমি পরের বাড়িতে কাজ করে মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। মেয়েকে কলেজে ভর্তি করানোর মত টাকা নেই। কি হবে আমার মেয়ের ? সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহয্যের আবেদন করেছেন পাপিয়ার মা মোমেনা বেগম।
পাপিয়াকে সরাসরি সাহায্য পাঠাতে যোগাযোগ করতে পারেন এই নাম্বারে : ০১৯৩০ ৫৪৬৯৩৯ (বিকাশ)
মন্তব্য চালু নেই