অভিজিৎ হত্যা নিয়ে মুখ খুললেন বন্যা
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলেছেন স্ত্রী রাফিদা আহমেদ। দুষ্কৃতকারীদের হামলার সময় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, যখন আমি এবং অভিজিৎ নৃশংসভাবে আক্রান্ত হয়েছিলাম, তখন ঘটনাস্থলের খুব কাছেই দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশ। কিন্তু তারা কোনো সহযোগিতা বা পদক্ষেপ নেয়নি। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক সংস্থা সেন্টার ফর এনকোয়ারি (সিএফআই) বিবৃতিটি প্রকাশ করে।
অভিজিৎ রায়কে হত্যা ও বন্যা গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন। অলাভজনক এ সংগঠনটির কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে একটি বিবৃতি দিয়েছেন বন্যা। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই বিবৃতিটি অভিজিতের পরিবার প্রকাশ করতে বলেছে।
সেখানে বন্যা লিখেছেন, আমার স্বামী অভিজিৎ রায় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ নিয়ে লেখালেখি করেছেন। বিবৃতিতে বন্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঐতিহাসিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের তীর্থক্ষেত্র উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, অভিজিৎ এখানেই বেড়ে উঠেছে। হত্যার হুমকি থাকার পরও আমরা কোনোদিন ভাবতে পারিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যামপাস ঐতিহাসিকভাবেই প্রগতিশীল আন্দোলনের স্থানে এমন ঘটনা ঘটবে।
এই হামলাকে কেবল একজন ব্যক্তিই নয়, বরং মুক্তভাবে কথা বলা ও মানবতার ওপর হামলা বলে অভিহিত করেছেন বন্যা। তিনি বলেন, বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদ নিয়ে লেখার কারণেই অভিজিৎ ও আমার ওপর হামলা হয়।
বন্যা আরো বলেন, আমি মনে করি না, শুধু হত্যাকারীকে ধরাই যথেষ্ট হবে। আমি সন্ত্রাসবাদকে মোকাবিলা করা এবং দায়মুক্তির আইনি কাঠামো, যে কাঠামোয় লেখককে হত্যা করার জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হয় না। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে খুনিদের ধরে বিচারের আওতায় আনতে সরকারের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগের দাবি জানান।
বেসরকারি সংগঠন সেন্টার ফর ইনকোয়ারির’ সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় বন্যা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত কুপিয়ে অভিজিৎ রায়কে হত্যা করে। তিনি মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের ছেলে। অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকেও গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত বন্যাকে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
মন্তব্য চালু নেই