অভিজিৎ হত্যায় আল-কায়েদা জড়িত কি না নিশ্চিত নয় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিত রায়কে হত্যার সঙ্গে আল-কায়েদার জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

শনিবার এসআইটিই ইন্টেলিজেন্স প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাতে একটি ভিডিও বার্তায় আল-কায়েদার দক্ষিণ এশিয়ার নেতা আসিম ওমর অভিজিৎ হত্যার দায় স্বীকার করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশি-আমেরিকান লেখক অভিজিৎ রায়ের হত্যার বিষয়ে আল-কায়েদা দায় স্বীকার সম্পর্কে সচেতন আমরা। তবে আমরা নিশ্চিত করতে বলতে পারছি না বেপরোয়া ওই জঙ্গি হামলাটি করেছে। ‘

অভিজিৎ হত্যকাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

এদিকে, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বাংলাদেশে আল-কায়েদা অস্তিত্বের কোনও প্রমাণ নেই। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যরা এখন পর্যন্ত দেশে আল-কায়েদার অস্তিত্ব এবং এর নেটওয়ার্কের সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ পায়নি।

সোমবার প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এবং আল-কায়েদার মধ্যে যোগসূত্রেরও কোনও প্রমাণ পায়নি। যার ওপর ভিত্তি করে দেশে আল-কায়েদার অস্তিত্ব ও নেটওয়ার্ক আছে বলে ধারণা করা যায়।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, মতাদর্শগত কারণেই আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এসব হত্যাকাণ্ড করেছে। যেগুলো তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম আল-কায়েদার একটি ঘনিষ্ঠ সংগঠন। আল-কায়েদার যাবতীয় মতাদর্শকে তারা অনুসরণ করে। তবে আল-কায়েদার অঙ্গ সংগঠন কিনা এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশের বই মেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় লেখক ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। প্রাণে বেঁচে গেলেও একই ঘটনায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন।

ঘটনার পর দায় স্বীকার করে আনসার বাংলা-৭ নামের একটি জঙ্গি সংগঠন। সেটিও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একটি স্লিপার সেল হতে পারে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। পরে এ মামলার তদন্তে গোয়েন্দা পুলিশকে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহায়তা দিতে বাংলাদেশে আসে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র একটি প্রতিনিধি দল। তারাও হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছু আলামত নিয়ে যায়। এফবিআই’র ফরেনসিক ল্যাবে এসব পরীক্ষা করা হবে বলেও জানান গোয়েন্দারা।

শনিবার জিহাদিস্ট ফোরাম নামের একটি মনিটরিং ওয়েবসাইটে ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার প্রধান আসিম উমর। একইসঙ্গে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু, রাজীব হায়দার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একেএম শফিউল ইসলাম হত্যারও দায় স্বীকার করেছে সংগঠনটি। এ সংগঠনটি বিভিন্ন জিহাদি সংগঠনের ইন্টারনেটে প্রকাশ করা বার্তা পর্যবেক্ষণ করে।



মন্তব্য চালু নেই