অভাবের তাড়নায় ডিম্বাণু বিক্রি করছেন আদিবাসী মেয়েরা

অর্থের বিনিময়ে কি সবকিছুই কেনা যায়? তেলেঙ্গানার এই প্রবল দারিদ্র্য-পীড়িত আদিবাসী মেয়েগুলির দিকে তাকালে এই প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ বলতেই ইচ্ছে করবে। নালগোণ্ডা জেলার দেবারাকোণ্ডা অঞ্চলের মেহবুবনগর, ওয়ারঙ্গল, করিমনগর প্রভৃতি আদিবাসী এলাকার যুবতী মেয়েরা দারিদ্রের চাপে এবং এক শ্রেণির দালালের পাল্লায় পড়ে নিজেদের ‌ডিম্বাণু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই সব এলাকায় দারিদ্র্যের পীড়া যেমন চরম, তেমনই খরার প্রকোপও যথেষ্ট। এই দু’য়ের প্রভাবে এই সব অঞ্চলের মেয়েরা প্রবল অপুষ্টিতে ভোগেন। আর তারই সুযোগে দালালেরা বিভিন্ন ইনফার্টিলিটি সেন্টারের হয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে ডিম্বাণু ক্রয় করছে।

জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত লাভের আশায় এই সব মেয়েদের শরীরে বিশেষ ধরনের ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করা হচ্ছে। ড্রাগ এবং হরমোনের প্রভাবে এতে মেয়েদের শরীরে বেশি সংখ্যক ডিম্বাণু উৎপাদিত হচ্ছে ঠিকই কিন্তু অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের শরীর। ম্যাক্সকিয়োর হাসপাতালের ডাক্তার আনাগানি মঞ্জুলা জানান, এই ধরনের ইঞ্জেকশন প্রয়োগের ফলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দে‌খা দিতে পারে। এর ফলে ডিম্বাশয়ের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হতে পারে এবং এই মেয়েদের মা হওয়ার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বাধা আসতে পারে।

মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন ত্রিপুরানা ভেঙ্কটরত্নম বলেন, এই মেয়েরা ডিম্বাণু মাফিয়াদের শিকার। এরা সামান্য অর্থের লোভে নিজেদের শরীরের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করছেন। আসলে ভেঙ্কটরত্নম যাকে লোভ বলে মনে করছেন, তা দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী এই মেয়েগুলির কাছে নিজের এবং পরিবারের মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্ন যোগানোর উপায়। আর কে না জানে, বর্তমানের চিন্তা ভবিষ্যতের চিন্তার চেয়ে সর্বদাই অনেক বেশি জোরদার।



মন্তব্য চালু নেই