অবশ্যই গুলি করা হবে

আন্দোলনের নামে মানুষের জানমাল ক্ষতি করলে পুলিশের ওপর অর্পিত ক্ষমতা বলে পুলিশ অব্যশই গুলি চালাতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এম হাফিজ আক্তার।

রোববার চট্টগ্রাম চেম্বার মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময়’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজ করে চট্টগ্রাম চেম্বার।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘অবরোধের নামে চলছে নাশকতা, তাও আবার দিনে নয় রাতের আঁধারে চোরগোপ্তা হামলা। এসব নাশকতাকারীদের প্রতিহত করতে পুলিশ যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অনেকে বলে পুলিশ গুলি করতে পারবে কি না? বাংলাদেশ প্যানেল কোর্ট অনুযায়ী হত্যার উদ্দেশে কিংবা কেউ জানমালের ক্ষতি সাধন করলে তাকে গুলি করার ক্ষমতা পুলিশের ওপর ওর্পিত আছে। সেটি এখন থেকে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে। এখন গুলি করা নিয়ে এতো কথা উঠার কোনো সুযোগ নেই। নাশকতাকারীদের হাত থেকে জানমাল রক্ষায় পুলিশ অবশ্যই গুলি করবে।’

তিনি বলেন, ‘শুধু পুলিশ কেন? র‌্যাব, বিজিবিও মানুষের জানমাল রক্ষায় নাশকতারীদের গুলি করতে পারবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগের চেয়ে অনেক বেশি আনসার, পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়ন রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সেই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।’

নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে জনসচেতনা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে এসপি হাফিজ আক্তার বলেন, ‘কতিপয় কয়েকজন নাশকতাকারী এসব বোমাবাজি করছে। যাদের আপনারা আমরা সবাই চিনি। এদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। এদের বিরুদ্ধে পুলিশকে তথ্য দিয়ে ধরিয়ে দিতে হবে। পাড়ায়-মহল্লায় নাশকতার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’

সিএসপি কমিশনার আব্দুল জলিল মণ্ডল বলেন, ‘অবরোধের নামে এসব গণতান্ত্রিক বিড়ম্বনায় রাজনৈতিক ফায়দা কে কতটুকু পাচ্ছেনা সেটি আমি নিশ্চিত না হলেও জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। রাজনীতির নামে মুষ্টিমেয় কয়েকজন খারাপ লোক সন্ত্রাসীদের হাতে বোমা তুলে দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। তাদের প্রতি আমার একটাই ম্যাসেজ, দুর্বৃত্তপনা ছেড়ে দিন, না হয় মাটির নিচে থাকলেও খুঁজে বের করা হবে। শুধু সন্ত্রাসীদের নয় যারা অর্থায়ন করছে তাদেরও ছাড় দেয়া হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এসব নাশকতাকারী বোমাবাজদের বিরুদ্ধে এলাকায় এলাকায় জনসচেনতা তৈরি করতে হবে। বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের জনগণের নিরাপত্তা ও ব্যবসা-বাণিজ্য নির্বিঘ্ন করতে সিএমপি সব সময় নিরাপত্তা প্রদান করতে প্রস্তত রয়েছে।’

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য পরিবহন ও যাত্রী পরিবহনে পুলিশ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে, আগামীতেও দেবে। বিশেষ করে মহাসড়কে এসব নাশকতা যারা করে, তাদের গ্রেপ্তারে আমার ১১ জেলায় প্রতিদিন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। নাশকতারীদের বিরুদ্ধে প্রত্যেক এলাকায় জনসচেতনা বৃদ্ধি করে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’

মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘এটি কোনো আন্দোলন নয়, স্রেফ নাশকতা। এখন মাঠে-ময়দানে আন্দোলন হয় না। আন্দোলন হচ্ছে নাশকতা আর ডিজিটাল পদ্ধতিতে। একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি অনলাইনে দিয়ে দিলেই সেটি মিডিয়ায় প্রচার হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী এসব নাশকতায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের সবার বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সঞ্চলনায় ও সিনিয়র সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।



মন্তব্য চালু নেই