অবশেষে দেখা হলো দুই মেসির!

মনে আছে মুর্তজা আহমাদি নামের সেই আফগান বালকের কথা? এ বছরের শুরুতে প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে লিওনেল মেসির জার্সি বানিয়ে ফুটবল বিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছিল ছয় বছর বয়সী আহমাদি। নজর কেড়েছিল আর্জেন্টাইন তারকা মেসিরও। খুদে এই ভক্তকে নিজের স্বাক্ষর করা সত্যিকারের জার্সিও পাঠিয়েছিলেন এ সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার।

আহমাদির আফসোস ছিল শুধু একটাই। সামনাসামনি দেখা হয়নি মেসির সঙ্গে। এবার সেই আক্ষেপও ঘুচে গেল আফগানিস্তানের ‘প্লাস্টিক মেসির’। দোহায় দেখাও হয়ে গেল দুই মেসির।

কাতারের ক্লাব আল আহলির বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলার জন্য বার্সেলোনা দল এখন আছে দোহায়। দলের প্রধান তারকা মেসিও গিয়েছেন দলের সঙ্গেই। আর ‘প্লাস্টিক মেসি’ আহমাদি আগে থেকেই ছিল কাতারের রাজধানীতে। এত কাছাকাছি এসেও নিজের এই খুদে ভক্তর সঙ্গে দেখা করার সুযোগটা হাতছাড়া করেননি মেসি। বেশ খানিকটা সময় কাটিয়েছেন তার সঙ্গে। কোলে নিয়ে ছবিও তুলেছেন। সেই ছবিটিই টুইটারে প্রকাশ করেছে কাতারের ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটি। সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘এই ছবিটা পুরো বিশ্বই দেখতে চেয়েছে। ছয় বছর বয়সী এই বালকের স্বপ্ন ছিল তার নায়ক মেসির সঙ্গে দেখা করার। সেটা শেষপর্যন্ত সত্যি হয়েছে।’

সত্যিই যে স্বপ্নটা এভাবে সত্যি হবে তা হয়তো মুর্তজা আহমাদি বা তার পরিবার ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে বেশ কষ্টেই দিন কাটাতে হতো আহমাদিদের। মেসির প্রচণ্ড ভক্ত হলেও তাঁর একটা সত্যিকারের জার্সি কিনে গায়ে দেওয়ার মতো অবস্থাও ছিল না এই আফগান বালকের। তবে তাতে দমে যায়নি আহমাদি। প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে বানিয়ে নিয়েছিল মেসির জার্সি। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো।

শুরুতে জানাই যাচ্ছিল না কে এই খুদে মেসিভক্ত। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে জানা যায় তার নাম-ঠিকানা। খুদে ভক্তের এই কাণ্ড দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন মেসিও। ইউনিসেফের মাধ্যমে নিজের স্বাক্ষর করা জার্সি পাঠিয়েছিলেন আফগানিস্তানে।

সেটা নিয়েও কাণ্ড কম হয়নি। মেসি জার্সির সঙ্গে টাকা-পয়সাও পাঠিয়েছেন, এমনটা ধরে নিয়ে আহমাদির পরিবারের ওপর কুদৃষ্টি দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। সেগুলো এড়ানোর জন্য আফগানিস্তান ছেড়ে পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছিল আহমাদিরা।

এখন অবশ্য এই সব কিছুই তুচ্ছ মনে হতে পারে আহমাদির কাছে। সে যে উঠেছে স্বপ্নের নায়ক লিওনেল মেসির কোলে! বার্সেলোনার ম্যাচেও সে মাঠে নামবে মেসির হাত ধরে। কে জানে, একদিন হয়তো মেসির পথ ধরে পেশাদার ফুটবলারও হয়ে উঠবে আফগানিস্তানের এই বালক!



মন্তব্য চালু নেই