অবরোধে ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের দুধ ঢেলে প্রতিবাদ

বাংলাদেশের পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলায় মিল্ক ভিটা সমবায় সমিতির কাছে দুধ বিক্রি করতে না পেরে ক্ষোভে তা মাটিতে ঢেলে দিয়েছেন একদল খামারী।

পাবনার চলনবিল এলাকার তিনটি উপজেলায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপাদিত হয়। বছরের এই সময়টাকে দুধ উৎপাদন বেড়ে যায় অনেকগুণ।

স্থানীয় একজন সাংবাদিক মাহবুবুল আলম জানান, অবরোধের কারণে মিল্ক ভিটা, প্রাণ এবং ব্রাক-সব বিভিন্ন দুগ্ধ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। ফলে তারা খামারীদের কাছ থেকে আগের মত দুধও কিনতে পারছে না। ভাঙ্গুরায় মিল্ক ভিটার একটি কেন্দ্র আজ কয়েকজন খামারীর দুধ কিনতে অস্বীকৃতি জানানোর পর তারা দুধ মাটিতে ঢেলে দেন।

ভাঙ্গুরার ওই এলাকার একজন বড় খামারী আবুল কালাম আজাদ জানান, তারা দুধ উৎপাদন করেন ১৮ হাজার লিটার। কিন্তু এ মাসের শুরু থেকে মিল্ক ভিটা ১৪ হাজার লিটারের বেশি দুধ কেনা হবে না বলে কোটা বেঁধে দিয়েছে।

মিল্ক ভিটার কর্মকর্তারা বলছেন, “হরতাল-অবরোধের কারণে আমাদের এখানে গাড়ি-ঘোড়া ঠিকমত আসছে না, আমরা দুধ একশ ভাগ কিনতে পারছি না। ফলে এই চার হাজার লিটার দুধ নিয়ে আমরা বিপদে পড়ছি। বাইরে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।”

সকালের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, মিল্ক ভিটার কর্মকর্তারা আজ কয়েকজন খামারীর দুধ কিনতে অস্বীকৃতি জানান এই বলে যে এসব দুধ টক হয়ে গেছে। তখন তিন-চারজন ক্ষুব্ধ খামারী তাদের দুধ মাটিতে ঢেলে দেন।

তবে স্থানীয় সাংবাদিক মাহবুবুল আলম জানান, দুধ টক হওয়ার কথা বলে কিনতে অস্বীকৃতি জানালেও খামারীদের কয়েকজন সেই একই দুধ অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে নিয়ে বিক্রি করেছেন। খামারীরা তাকে জানিয়েছেন, তাদের দুধ যদি টক হতো, অন্যরা তাদের কাছ থেকে তা ক্রয় করতো না।

মিল্ক ভিটার এই কেন্দ্রের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, যারা দুধ ঢেলে ফেলে দিয়েছেন, তাদের দুধ টক হয়ে গিয়েছিল বলেই তারা কিনতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

তবে তিনি স্বীকার করেন যে হরতাল-অবরোধের কারণে তারা ঠিকমত চাষীদের কাছ থেকে দুধ কিনতে পারছেন না, এবং তা নিয়মিত কারখানায় পাঠাতে পারছেন না। কামরুল ইসলাম বিবিসিকে বলেন, “এমনিতেই বছরের এই সময়টায় সেখানে দুধ উৎপাদন বহুগুন বেড়ে যায়। এর সঙ্গে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে হরতাল-অবরোধ। ফলে চাষীরা এখন ভীষণ সংকটে পড়েছেন।”

সূত্র: বিবিসি



মন্তব্য চালু নেই