অন্ধ্রে হুদহুদ, বৃষ্টি থাকবে ২ দিন
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উড়িষ্যায় অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আঘাত হানতে যাচ্ছে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’। যার প্রভাবে বাংলাদেশেও বইতে শুরু করেছে ঝড়ো হাওয়া। কিছুটা বৃষ্টিও রয়েছে সঙ্গে। তবে আবহাওয়ার এমন বিরূপ আচরণ চলবে আরো দু’দিন। তারপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে পরিস্থিতি।
শনিবার দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শামসুদ্দিন আহম্মেদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘হুদহুদের কারণেই বাংলাদেশে ঝড়ো বাতাস বইছে। সাথে কিছুটা বৃষ্টিও রয়েছে। এমন আবহাওয়া থাকবে আরো দুইদিন।’
হুদহুদের প্রভাবে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে কি-না জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘যেহেতু হুদহুদ সরাসরি ভারতে আঘাত হানবে তাই বাংলাদেশে খুব একটা ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই। যেটুকু ক্ষয়ক্ষতি হবে তা ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ এখন মহাশক্তিশালী হয়ে ভারতের অন্ধ্র ও উড়িষ্যা প্রদেশে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে শুরু করেছে। আর এই ঝড়ো হাওয়ার কারণে জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে এক থেকে তিন ফুট বেড়ে যেতে পারে। এ আশঙ্কায় দেশের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলকে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের উপকূলের নিম্নাঞ্চলের জেলাগুলোকে জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
দুপুর ১২টায় ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ কিছুটা সরে গিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ১৩০ কিলোমিটার এবং তা সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়াবিদেরা বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে দ্রুত উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সেগুলোকে নিরাপদ স্থানে অবস্থানের জন্য বলেছেন।
আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে তিন ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে। এছাড়া সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে।
মন্তব্য চালু নেই