অনলাইনে তথ্য সংশোধনের সুযোগ পাচ্ছেন ভোটাররা
অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের সুযোগ পাচ্ছেন ভোটাররা। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সফটওয়্যারও প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো মুহূর্তে ভোটাররা এই সুযোগ পাবেন উল্লেখ করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের সফটওয়্যার প্রস্তুত শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সফটওয়্যারটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি, যে কোনো মুহূর্তে সফটওয়্যারটি অনলাইনে তুলে ধরতে পারব। তবে কোনো কারণে সম্ভব না হলে আগামী সপ্তাহে অবশ্যই ভোটাররা অনলাইনে তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।’
ভোটারদের তথ্য সংশোধনের এই সুযোগ আরো আগে দেওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে দেওয়া সম্ভব হয়নি বলেও তিনি জানান।
এর মাধ্যমে ৯ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫২ জন ভোটার তাদের তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।
নাগরিকদের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দেওয়ার লক্ষ্যেই ইসি এই সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। বর্তমানে সরবরাহ করা লেমিনেটিং কার্ডে নাগরিকরা ছয়টি তথ্য দেখতে পান। কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার প্রায় ২০টি তথ্য দেখার সুযোগ পাবেন এবং সংশোধন করতে পারবেন। ২৬ মার্চ থেকে নাগরিকদের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দেবে ইসি।
এর আগে কমিশন সভায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন সফটওয়্যারটি উত্থাপন করেন। পরে কমিশন সফটওয়্যারটি অনুমোদন দেয়।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলেন, ‘ইতোমধ্যে সফটওয়্যারটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ভোটাররা অনলাইনে তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।’
গত ১৮ জানুয়ারি সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে স্মার্ট কার্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন। ওইদিন তিনি জানান, ‘কার্ড দেওয়ার আগে সবার জন্যে অনলাইন ও অফলাইনে তথ্য সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। শুধুমাত্র অনলাইনে তথ্য সংশোধন করা যাবে এমনটা নয়, যে সব এলাকায় অনলাইন সুবিধা নেই তারাও লিখিত আবেদন করে তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘অধিকতর নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিত করার জন্য আটটি ইন্টারন্যাশনাল সার্টিফিকেশন ও স্ট্যান্ডার্ড নিশ্চিত করা হয়েছে।’
ইসি জানায়, স্মার্টকার্ড বিতরণ ও প্রস্তুত করতে ফরাসি কোম্পানি অবারথু টেকনোলজির সঙ্গে চুক্তি করেছে নির্বাচন কমিশন। কোম্পানিটি ৯ কোটি স্মার্টকার্ড ২০১৬ সালের জুনের মধ্যেই ভোটারদের হাতে তুলে দেবে। এতে ৭৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
ইসি আরো জানায়, প্রাথমিকভাবে ২৫টি কাজে স্মার্টকার্ড ব্যবহার করা হবে। এগুলো হলো—সরকারি সব অনলাইন সুবিধা, টিআইএন নম্বর (TIN) প্রাপ্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, সম্পত্তি কেনাবেচা, ব্যাংক হিসাব খোলা, ব্যাংক ঋণ, সরকারি ভাতা উত্তোলন, সহায়তা প্রাপ্তি, বিআইএন, শেয়ার-বিও একাউন্ট, ট্রেড লাইসেন্স, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বীমা স্কিম, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন, ই-পাসপোর্ট, ই-গভর্নেন্স, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল সংযোগ, হেলথ কার্ড, ই-ক্যাশ, ব্যাংক লেনদেন ও শিক্ষার্থীদের ভর্তি।
মন্তব্য চালু নেই