অনলাইনেই করা যাচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন

আর ভোগান্তি নয়, এবার ঘরে বসেই ভোটাররা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), আবেদন, সংশোধন, অ্যাকাউন্ট তৈরি এখন অনলাইনেই করা যাবে। আইডিইএ প্রকল্পের মাধ্যমে এই সিস্টেম চালু করলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বুধবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

www.ecs.org.bd এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নতুন ভোটার রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করা, রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নিজের জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি, নিজস্ব তথ্য ও ভোটকেন্দ্রের তথ্য দেখা, নিজস্ব তথ্য পরিবর্তন সংশোধন, হালনাগাদ করার জন্য আবেদন করা, ছবি স্বাক্ষর পরিবর্তন, আঙুলের ছাপ গ্রহণ ও অন্যান্য প্রয়োজনে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নেয়া যাবে। হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র প্রতিস্থাপনের জন্য আবেদন করা যাবে।

অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শিত-অপ্রদর্শিত উভয় তথ্য দেখার এবং তথ্য আপগ্রেড করার সুযোগ পাওয়া যাবে। বাড়িতে বসেই সময় ও সুযোগ মতো তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করা যাবে। ব্যবহারকারী নিজে আবেদন করার ফলে বানান ও অন্যান্য ধরনের ভুল হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

উদ্বোধনকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ওয়েবসাইটটিকে নিরাপদ করা হয়েছে যাতে কারো অ্যাকাউন্ট অন্য কেউ হ্যাক করতে না পারে বা দেখতে না পারে। এজন্য আমরা বুয়েটের এক্সপার্ট দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যবহারের সময় কোনো সমস্যা দেখা দিলে আমাদের একটা টেকনিক্যাল এক্সপার্ট দল আছে, তারা সমস্যার সমাধান করে দেবে।’

তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদনের নিয়ম

তথ্য সংশোধনের জন্য ভোটারদের প্রথমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইট www.ec.org.bd/Bangla/ প্রবেশ করতে হবে। এর পর ডান পাশের ‘এনআইডি অনলাইন সার্ভিসেস’ লেখা লিংকে অথবা সরাসরি services.nidw.gov.bd/ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। পরে রেজিস্ট্রেশন অপশনে গিয়ে চারটি ধাপে তথ্য পূরণ এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন শেষ হলেই মোবাইল বা ই-মেইলে যাওয়া গোপন নম্বরের মাধ্যমে এ্যাকাউন্ট সচল করবেন।

NID (2)

এ্যাকাউন্ট সচল হওয়ার পর ভোটাররা ফরম পূরণের সময় দেওয়া তথ্য দেখতে পারবেন এবং তা সংশোধনের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, অনলাইনের মাধ্যমে নামের বানান, ঠিকানা, স্বাক্ষর, রক্তের গ্রুপ, জন্ম তারিখ ছবিসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। তবে তথ্য সংশোধের সময় অবশ্যই ইসির চাহিদামতো প্রমাণাদি দিতে হবে। এ ছাড়া যে সব এলাকায় অনলাইনের ব্যবস্থা নেই তারাও লিখিত আবেদনের মাধ্যম তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। বিদ্যমান ভোটারদের তথ্য সংশোধন শেষ হলেই ইসি স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত শুরু করবে।

ইসি জানায়, স্মার্ট কার্ড বিতরণ ও প্রস্তুত করতে ফরাসী কোম্পানি অবারথু টেকনোলজির (oberthur technology) সঙ্গে চুক্তি করেছে নির্বাচন কমিশন। কোম্পানিটি ২০১৬ সালের জুনের মধ্যেই ৯ কোটি ভোটারের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দেবে। এতে ৭৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে।

NID (3)

ইসি আরও জানায়, প্রাথমিকভাবে ২৫টি কাজে স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করা হবে। এগুলো হলো- সরকারি সব অনলাইন সুবিধা, টিআইএন নম্বর (TIN) প্রাপ্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, সম্পত্তি কেনাবেচা, ব্যাংক হিসাব খোলা, ব্যাংক ঋণ, সরকারি ভাতা উত্তোলন, সহায়তা প্রাপ্তি, বিআইএন, শেয়ার-বিও এ্যাকাউন্ট, ট্রেড লাইসেন্স, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বীমা স্কিম, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন, ই-পাসপোর্ট, ই-গভর্ন্যান্স, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল সংযোগ, হেলথ কার্ড, ই-ক্যাশ, ব্যাংক লেনদেন ও শিক্ষার্থীদের ভর্তি ক্ষেত্রে এ স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই