তিস্তার পানি না পেলে আরো কঠোর কর্মসূচি: বিএনপি

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পেলে আরো কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়ে দুদিনের লং মার্চ কর্মসূচি শেষ করেছে বিএনপি। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে মঙ্গলবার ঢাকা থেকে গাড়িবহর নিয়ে রওনা হয়ে বিভিন্ন স্থানে পথসভার পর বুধবার দুপুরে তিস্তা ব্যারেজের পাশে শেষ সমাবেশ করেন বিএনপি নেতারা। সেখানে সমাবেশে ফখরুল বলেন, “শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় আমাদের ১০ হাজার কিউসেক পানির প্রয়োজন। এক লং মার্চে তিস্তায় ৩ হাজার ৬ কিউসেক পানি বেড়ে গেছে। “আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, তিস্তার পানি না দিলে ভবিষ্যতে আরো বৃহত্তর কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব।”
বিএনপির এই কর্মসূচির মধ্যে ধুকতে থাকা তিস্তায় মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে পানি প্রবাহ বেড়ে ৩ হাজার কিউসেক ছাড়িয়ে গেলেও বুধবার তা আবার কমে অর্ধেকে নেমে আসে।
“নেত্রীর (খালেদা জিয়া) এক কর্মসূচিতে তিস্তায় ৩ হাজার ৬ কিউসেক পানি বেড়ে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের লং মার্চের জন্য পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা আমাদের কর্মসূচির প্রাথমিক সফলতা।”
ঢাকা থেকে রওনা হয়ে প্রথম দিন রংপুরে রাত কাটান বিএনপি নেতারা। নগরীতে বুধবার সকালে সমাবেশ করে রওনা হয়ে ৯৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দুপুর ১২টায় তিস্তা ব্যারেজের নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে পৌঁছে লং মার্চ। আগে থেকে অবস্থানরত কয়েক হাজার বিএনপি নেতা-কর্মী ব্যারেজের সামনে হেলিপ্যাড মাঠে ফখরুলদের স্বাগত জানায়। পরে সেখানে আড়াই ঘণ্টার সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় কর্মসূচি।
‘তিস্তা নদীর পানি দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’, ‘খালেদা জিয়া এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’ স্লোগানের মধ্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিস্তার পানিশূন্যতা নিয়ে ভাওয়াইয়া গান গেয়ে শোনান স্থানীয় শিল্পীরা। পানির অভাবে এলাকাবাসীর দুর্দশার কথা তুলে ধরেন তিস্তা পাড়ের কৃষক আসিম উদ্দিন।
বৈশাখের কড়া রোদের মধ্যে নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, পঞ্চগড় জেলার বিএনপি নেতা-কর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেয়।
কর্মসূচির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে ফখরুল সমাবেশে বলেন, “এই লং মার্চ ভারত সরকার ও তার জনগণের বিরুদ্ধে নয়। আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আন্দোলন করছি। “আমাদের দেশ ছোট হতে পারে। কিন্তু ১৬ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ আমাদের পদানত করতে পারবে না।” তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ভারত সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “তিস্তার জন্য ১০ হাজার কিউসেক পানি আমাদের প্রয়োজন। ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব সুদৃঢ় তখনি হবে, যখন তিস্তার পানি ১০ হাজার কিউসেকে আসতে থাকবে।” তিস্তায় পানির অভাবে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ, কৃষিজাত ফসলের ক্ষতি, পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকগুলো তুলে ধরেন সাবেক কৃষি এই প্রতিমন্ত্রী। ‘নতজানু’ আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের কাছ থেকে পানি আনতে পারবে না বলে দাবি করেন তিনি। “তারা কখনো তিস্তা পানি চুক্তি করতে পারবে না। কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। যাদের শক্তিতে তারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের তারা (আওয়ামী সরকার) অখুশি করতে চায় না।” ‘জনগণের সরকার’ প্রতিষ্ঠায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বচনের দাবিতে আন্দোলনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান ফখরুল।
বিএনপির এ লং মার্চ দশম সংসদ নির্বাচন বয়কটের পর এটাই ছিল দলটির বড় ধরনের প্রথম কর্মসূচি। তবে ঢাকা থেকে রংপুর পর্যন্ত প্রথম দিনের পথসভাগুলোতে তেমন জনসমাগম দেখা যায়নি। ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দা ফখরুলের নেতৃত্বাধীন এই লং মার্চের শেষ দিনে সমাবেশগুলোতে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি ছিল।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু‘র সভাপতিত্বে শেষ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাহবুবুর রহমান, জমিরউদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, ওসমান ফারুক, শামসুজ্জামান দুদু, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আহমেদ আজম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মিজানুর রহমান, হারুন অর রশীদ, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু, বজলুল করীম চৌধুরী আবেদ প্রমুখ।
১৯ জোটের নেতাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মজিবুর রহমান, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত আমেনি, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা আহসান হাবিব লিংকন বক্তব্য দেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের রংপুরের মুজাফফর হোসেন, নীলফামারীর লুৎফর রহমান মিন্টু, আনিসুর আরেফিন চৌধুরী, লারলমনিরহাটের হাফিজুর রহমান বাবলা বক্তব্য রাখেন।
সিপিবি-বাসদসহ বাম দলগুলোর পর তিস্তামুখে লং মার্চ করে বিএনপি।
অন্যরা এখন যা পড়ছেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর কবিতার লেখক এখন ছাত্রলীগ নেতা

ওবায়দুল কাদেরকে আমন্ত্রণ জানাতে গিয়ে ফিরে এলো বিএনপি

নতুন জোট করলেও সরকারের সঙ্গে থাকবে জাতীয় পার্টি : কাদের

খালেদার আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আ. লীগ কার্যালয়ে যাচ্ছে বিএনপি

জোট গড়া আর ভাঙার ‘কারিগর’ এরশাদ

‘আগামী নির্বাচনে কারও দায়িত্ব নিতে পারব না’

ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদের : হলে কেন পলিটিক্যাল রুমের দরকার হবে?

এরশাদের ‘ডিগবাজি জোটে’ মাথাব্যথা নেই ১৪ দলের

বিএনপির ‘ভিশন-২০৩০’ তামাশা

৫৮ দল নিয়ে এরশাদের নতুন জোট ঘোষণা

বাংলাদেশে পুতুল সরকার চায় অ্যামনেস্টি : জয়

এনপিপি চেয়ারম্যান নিলু আর নেই

স্বতন্ত্র এমপিদের দলে টানছে আ.লীগ

পাচারের টাকায় কানাডায় বেগমবাজার : রিজভী



















মন্তব্য চালু নেই