হাত-চোখ বেঁধে আটক রাখা হয়েছিল সোহাগকে

সোহাগী জাহান তনুর ছোট ভাইয়ের বন্ধু মিজানুর রহমান সোহাগকে হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছেন।

সোহাগ জানান, খাওয়ার সময় তার এক হাত খুলে দেওয়া হতো। তবে কারা তাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল, তিনি তা বুঝতে পারেননি।

১৬ দিন নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নারায়ণসার গ্রামে নিজ বাড়িতে ফেরেন সোহাগ। তিনি শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন। তার কথাবার্তা এলোমেলো।

সোহাগ জানান, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মাইক্রোবাসের মধ্যে তার চোখ ও হাত বেঁধে ফেলা হয়। এরপর থেকে সব সময় তার চোখ ও হাত বাঁধা ছিল। খাওয়ার সময় এক হাত খুলে খাবার দেওয়া হতো।

সোহাগের চাচা মো. সেলিম জানান, মঙ্গলবার ফজরের নামাজ আদায় করার পর তিনি হাঁটছিলেন। নাজিরা বাজারে পেট্রোলপাম্পের কাছে সোহাগকে দেখতে পান। তিনি সেখান থেকে সোহাগকে বাসায় নিয়ে আসেন। এ সময় সোহাগের চোখ ও হাত বাঁধা ছিল না বলে জানান তিনি।

সোহাগ বলেন, ‘পাপ করিনি। তাই ফিরে এসেছি। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে এনেছেন।’

সোহাগের বাবা নুরুল ইসলাম ও মা সাহিদা আক্তার জানান, তাদের ছেলে ফিরে এসেছেন। এতেই তারা খুশি।

সোহাগের বড় বোন খালেদা আক্তার বলেন, ‘সোহাগ যে লুঙ্গি পরে বাড়ি থেকে গিয়েছিল, সেই লুঙ্গি পরেই ফিরে এসেছে। সে যেখানে ছিল, ভালোই ছিল বলে পরিবারকে জানিয়েছে।’

বুড়িচং থানার ওসি উত্তম কুমার বড়–য়া বলেন, ‘সকালে খবর পেয়েছি সোহাগ ফিরে এসেছে। পুলিশ তার বাড়িতে যাবে।’

গত ২৭ মার্চ গভীর রাতে প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে একদল লোক সোহাগকে তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছিল। পরিবারের সদস্যদের ধারণা, তনু হত্যার পর আন্দোলন করার কারণে সরকারি কোনো বাহিনীর সদস্যরা তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু ২০ মার্চ খুন হন। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে সেনানিবাসের বাসার পাশে তার লাশ পাওয়া যায়।



মন্তব্য চালু নেই