সরকারের আলটিমেটামেও কান দিচ্ছে না আইসোলাক্স

সরকারের ডেডলাইন ছিল ৫ নভেম্বর। আজ ৯ নভেম্বর। তবুও কাজে যোগ দেননি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান স্পেনের আইসোলাক্স এর কর্মীরা। নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে গত ৫ অক্টোবর আইসোলাক্স সরকারি তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত তাদের ৪১ কর্মীকে প্রত্যাহার করে নেয়।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কর্মী প্রত্যাহারে চুক্তির শর্ত ভেঙেছে আইসোলাক্স। গত ১৮ অক্টোবর স্পেনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে বিষয়টি সম্পর্কে অসন্তোষ জানায় বিদ্যুৎ বিভাগ। সরকারের পক্ষ থেকে ৫ নভেম্বরের মধ্যে আইসোলাক্সে’র কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়। স্পেনের রাষ্ট্রদূত বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত আইসোলাক্সের কোনো সাড়া পায়নি বিদ্যুৎ বিভাগ।

সবচেয়ে বেশি কর্মী যে বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করতো সেই প্রতিষ্ঠান ইলেক্টিসিটি জেনারেশন কোম্পানির (ইজিসিবি) পক্ষ থেকে রোববার সন্ধ্যায় বাংলামেইলকে জানানো হয়, সরকার ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। তবে আইসোলাক্স জানিয়েছিল ৮ নভেম্বরের মধ্যে তাদের কর্মীরা কাজে ফিরবে। তবে রোববার পর্যন্ত কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও কর্মীদের পাওয়া যায়নি। তাদের ঢাকার ফোন নম্বরগুলোও বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘তাদের কাজে যোগ দিতে হবে। না হলে চুক্তির শর্ত মতে জরিমানা করা হবে ৷ শর্ত ভঙ্গ করায় এর আগেও অনেক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। তাই আইসোলাক্স ছাড় পাবে এমনটা ভাবার কারণ নেই।’

উল্লেখ্য, পরপর দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের জেরে গত ৩ অক্টোবর নিজেদের নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে স্পেন। এরপর ৫ অক্টোবর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), ইজিসিবি, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও বিদ্যুৎ বিভাগকে নিজেদের কর্মীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে চিঠি দিয়ে অবহিত করে আইসোলাক্স। এরপর ৪১ কর্মীকে সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয় কোম্পানিটি। এর মধ্যে ইজিসিবির সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩৮ জন, পিডিবির বিবিয়ানা-৪৫০ মেগাওয়াটের ১ নম্বর ইউনিট থেকে দুজন এবং নর্থ ওয়েস্টের খুলনা-১৫০ মেগাওয়াট থেকে একজনকে প্রত্যাহার করা হয়। স্পেন ছাড়াও আর্জেন্টিনা ও বুলগেরিয়ার নাগরিক ছিল।

তবে সরকারের দাবি, সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে আইসোলাক্স নিজে নিজে এধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সরকারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা শ্রেণীর (কেপিআই) আওতায় রয়েছে। ফলে সেখানে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা অমূলক।

এরপরও আইসোলাক্সকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু তারা সে অনুরোধে সাড়া দেয়নি। নিজেদের কর্মীদের প্রত্যাহার করে দেশে ফিরিয়ে নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ অক্টোবর স্পেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বিদ্যুৎবিভাগ। রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয় আইসোলাক্সের কর্মীদের ৫ নভেম্বরের মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে। রাষ্ট্রদূত বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। কিন্তু ডেডলাইন পেরুবার পরও এখনো কেউ কাজে যোগ দেননি। বাংলামেইল



মন্তব্য চালু নেই