লক্ষ্মীপুরে ৫ হাজার গ্রাহকের ১৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও

লক্ষ্মীপুরে একটি মাল্টিপারপাস সোসাইটি গ্রাহকদের অতিরিক্ত লাভের প্রলোভন দিয়ে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে। প্রতিদিন টাকার জন্য অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন গ্রাহকরা। ফলে হাজার হাজার গ্রাহক নিজের জমাকৃত শেষ সঞ্চয় হারিয়ে নিঃস্ব এখন।

ভূক্তভোগীরা জানান, ৪ বছর আগে লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় সিদ্দিক টাওয়ারের তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে আরডিপি ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এমসিএস লিমিটেড নামের একটি মাল্টিপারপাস সোসাইটির জেলা শাখা অফিস খুলে আর্থিক লেনদেন শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালনার মাধ্যমে দিগুণ লাভের প্রতিশ্র“তি দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। শুরু করে গ্রাহক সংগ্রহ। গত ৪ বছরে প্রায় ৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ করে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটি গত বৃহস্পতিবার থেকেই তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে রাতের আঁধারে পালিয়ে যায় কর্মকর্তারা। এ ছাড়া জেলার রামগঞ্জ শাখাটিও একই অবস্থায়। সেখানেও গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পালিয়েছে তারা। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, এসব প্রতারক চক্রের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে জনগণকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকার।

এ বিষয়ে গ্রাহক হারুনুর রশিদ বলেন, অধিক লাভের আশায় ১১ গ্রাহকের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা এখানে জমা রাখি। রাতে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় কর্মকর্তারা। এখন কি করবো। কিভাবে গ্রাহকদের টাকা দেবো জানি না। গ্রাহকরা মিলে অফিসটা কোনভাবে চালু করা যায় কি-না। সেটাও বিবেচনা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা।

একইভাবে ১ হাজার টাকা থেকে লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা রেখেছেন গ্রাহকরা। এ ছাড়া একই অবস্থায় গ্রাহক আবদুল মালেক, পলাশ ও রিপন জানান, নিজেদের শেষ সঞ্চয়টুকু আরডিপি ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট মাল্টিপারপাস লক্ষ্মীপুর অফিসে জমা রাখি। প্রতিদিন অফিসে লোকজন এসে ভিড় জমান টাকার জন্য। কিন্তু কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী নেই। অফিস রেখে সবাই রাতের আঁধারে পালিয়ে গেছে। সব হারিয়ে আমরা নিঃস্ব।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. মেহের আহমদ জানান, রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ফাইন্যান্স (আরডিপি) অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে নারায়ণগঞ্জ জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নেয় শাখা ব্যবস্থপক আবদুর রাজ্জাক ও উন্নয়ন ব্যবস্থপক এম এম আশরাফুল আলম নামে দুই ব্যক্তি। অনুমোদিত এলাকা নারায়ণগঞ্জ। কিন্তু তারা বে-আইনী ভাবে লক্ষ্মীপুরে আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।



মন্তব্য চালু নেই