ভিটামিন সি কে প্রাকৃতিক ব্যথানাশক বলা হয় যে কারণে

অনেক মানুষই সামান্য ব্যথাতেও পেইনকিলার সেবন করে থাকেন। কিন্তু পেইনকিলারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক হতে পারে। পেইনকিলারগুলোকে NSAIDS (Non steroidal anti inflammatory drug) বলা হয়। এগুলোকে নিরাপদ বলা হলেও অধিক পরিমাণে সেবন করলে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এক লক্ষ মানুষের উপর করা ড্যানিশ এক গবেষণায় জানা যায় যে, এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকেরই হার্ট অ্যাটাক হয় যারা NSAIDS গ্রহণ করতেন ব্যথা কমানোর জন্য। ভিটামিন সি কে প্রাকৃতিক ব্যথানাশক বলা হয় কেন জেনে নিই চলুন।

যারা NSAIDS গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে ৬০% এর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার ঝুঁকিতে থাকেন। ২০১৪ সালের করা এক গবেষণায় জানা যায় যে, স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এমন মানুষদের ২০% এর ই NSAIDS গ্রহণ করার প্রবণতা ছিলো। ব্যথানাশক ঔষধ ইবোপ্রুফেন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া করোনারি রোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ করে।

শক্তিশালী ব্যথানাশক ঔষধ অক্সিকনটিন এর একটি ডোজ ১২ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যথা কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। যদিও অনেক রোগীর ক্ষেত্রেই এর প্রভাব এতক্ষন পর্যন্ত থাকেনা এবং এর অন্যান্য ঝুঁকিও আছে।

প্রাকৃতিক ভাবে ব্যথা কমানোর জন্য অনেক উপাদানই আছে। কিছু প্রাকৃতিক সাপ্লিমেন্ট ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী হচ্ছে ভিটামিন সি। ব্যথানাশক ঔষধের ক্ষতিকর ও মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে ভিটামিন সি।

ভিটামিন সি এর ব্যথানাশক গুণ নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে। এ সকল গবেষণায় দীর্ঘমেয়াদী ও অত্যধিক ব্যথা (CRPS) কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি কে এসকরবিক এসিড ও বলা হয়। যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিক অ্যান্টিহিস্টামিন ও অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। ২০০৭ সালে জার্নাল অফ বোন এন্ড জয়েন্ট সার্জারি তে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ৫০ দিনের বেশি দৈনিক ৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করলেই হাড়ের ফাটলের ব্যথা কমে চমৎকার ভাবে।

ভিটামিন সি এর উচ্চমাত্রার ডোজ (দৈনিক ১০০০ মিলিগ্রাম বা এরচেয়ে বেশি) বাঁচার জন্য লড়াই করছে এমন ক্যান্সার রোগীদের ব্যথা কমাতে পারে চমৎকার ভাবে এবং তাদের জীবনমাণের ও উন্নতি ঘটাতে পারে। কিছু ক্যান্সার রোগী তাদের মরফিন বন্ধ করে দিতে বলে এবং তাদের মধ্যে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায় না। আরো আশ্চর্যজনক ঘটনা হচ্ছে এদের মধ্যে ১৩% রোগী ভিটামিন সি গ্রহণের ফলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায় এবং পরবর্তী ৫ বছরে তারা ক্যান্সার মুক্ত হয়ে যায়।

সুস্থ থাকার জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুবই উপকারী। লাল মিষ্টি মরিচ, স্ট্রবেরি, সাইট্রাস ফল এবং ব্রোকলি ইত্যাদি হচ্ছে ভিটামিন সি এর চমৎকার উৎস। দৈনিক ভিটামিন সি গ্রহণের মাত্রা পুরুষের জন্য ৯০ মিলিগ্রাম এবং নারীদের জন্য ৭৫ মিলিগ্রাম।



মন্তব্য চালু নেই