ভারত থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন

ভারতের খোলা বাজার থেকে দৈনিক ৩০ থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এছাড়া সিরাজগঞ্জে ৪০০ মেগাওয়াট ডুয়েল-ফুয়েল আইপিপি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব দুটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে কমিটির সদস্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির আওতায় ভারতের খোলা বাজার থেকে ৩০ থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি ক্রয় কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। আজকের বৈঠকে সেটা বাতিল করে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির আওতায় বিদ্যুৎ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির আওতায় ভারতের খোলা বাজার থেকে ৩০ থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য ‘লিমিটেড টেন্ডারিং পদ্ধতি’র মাধ্যমে ভারতের দুটি কোম্পানি এনভিভিএন ও পিটিসি-এর কাছ থেকে দরপত্র আহবানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পূর্বের প্রস্তাবে এজেন্ট চার্জসহ বিদ্যুতের মোট মূল্য ধরা হয়েছিল ৫৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা থেকে ২৩১ কোটি ৮ লাখ টাকা।

বৈঠক শেষে অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিল্ড-ওন-অপারেট (বিওও) পদ্ধতিতে সিরাজগঞ্জে ৪০০ মেগাওয়াট ডুয়েল-ফুয়েল ভিত্তিক আইপিপি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ হচ্ছে ২২ বছর। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কোম্পানি ‘সেম্বকর্প ইউটিলিটিজ পিটিই লিমিটেড’ ও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ‘নওপাজেকো লিমিটেড’ যৌথভাবে এটি নির্মাণ করবে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুই বছরের মাথায় এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং তিন বছর পূর্ণ হলে এখান থেকে পুরো ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহারে প্রতি কিলোওয়াট-ঘন্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ মূল্য হচ্ছে ৩ টাকা ১৯ পয়সা এবং এইচএসডি ব্যবহারে প্রতি কিলোওয়াট-ঘন্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ মূল্য হচ্ছে ১৩ টাকা ৫৭ পয়সা।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, সিরাজগঞ্জের এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে ২২ বছরে সরকারকে ৫৬ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা দিতে হবে। এর মধ্যে জ্বালানি গ্যাস ব্যবহারে উৎপাদিত বিদ্যুতের জন্য (ন্যূনতম ৮৪.৬ % প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে) ২১ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা এবং এইচএসডি ব্যবহারে উৎপাদিত বিদ্যুতের জন্য (ন্যূনতম ৪০ % প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে) ৩৪ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জে ৪০০ মেগাওয়াট ডুয়েল-ফুয়েল আইপিপি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ইতোপূর্বে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ল্যানকো পাওয়ারকে মনোনীত করা হয়েছিল। কিন্তু যথাসময়ে ল্যানকো চুক্তি সম্পাদনে ব্যর্থ হওয়ায় গত ৯ জানুয়ারি তাদের ‘লেটার অব ইন্টেন্ট’ বাতিল করা হয়।

পরবর্তীতে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কোম্পানি ‘সেম্বকর্প ইউটিলিটিজ পিটিই লিমিটেড’ ও বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান ‘নওপাজেকো লিমিটেড’ যৌথভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে।

অতিরিক্ত সচিব জানান, এছাড়া বৈঠকে আরো দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘অভ্যন্তরীণ নৌ-পথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং (১ম পর্যায় : ২৪টি নৌ-পথ)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কাটার সাকশন ড্রেজার দ্বারা গাগলাগড়-মোহনগঞ্জ অংশের নাব্যতা উন্নয়ন কাজের ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ কাজ পেয়েছে যৌথভাবে এএমডিএল-এডিএল।



মন্তব্য চালু নেই