বাবুল কেন সেদিন পুলিশ সদর দফতরে গিয়েছিলেন ?

বলা হচ্ছে- কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে নয় ব্যক্তিগত ও কুশলাদি বিনিময় করতেই পুলিশ সদর দফতরে গিয়েছিলেন চাঞ্চল্যকর ফাহমিদা খানম মিতু হত্যার বাদী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। ফলে পুলিশ সদর দফতরের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো তার যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতেও নারাজ।

পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্র জানায়, যোগদানের বিষয় ইতিবাচক হলে বাবুল আক্তারকে পুলিশ সদর দফতর থেকে সিগন্যাল দেওয়া হবে। এর প্রক্রিয়া হচ্ছে- আইজিপির পক্ষে এআইজি বা প্রশাসন শাখার অতিরিক্ত এআইজি পদ মর্যাদার কেউ ফোন করে তাকে জানাবেন। তারপর তিনি পুলিশ সদর দফতরে রিপোর্ট করলে আইজিপি তাকে পদায়ন করবেন। কোনো সিগন্যাল বা ফোন ছাড়াই তিনি বুধবার সকাল ১১টায় পুলিশ সদর দফতের ঢোকেন। এরপর তিনি তার একবাধিক ব্যাচমেটের কক্ষে আলাপচারিতা করেন। এছাড়া তিনি প্রশাসন শাখায়ও যান এবং দুপুর ১টার দিকে তিনি পুলিশ সদর দফতর ত্যাগ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পদস্থ কর্মকর্তা গতকাল এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রায় দেড়মাস ধরে তিনি অলস সময় কাটাচ্ছেন। তাই হয়তো ব্যাচমেটদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে এসেছিলেন। তার যোগদান সংক্রান্ত তথ্য সঠিক নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পুলিশ সদর দফতরের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, বাবুল আক্তার আনঅথোরাইজড লিভে আছেন, একজন কর্মকর্তা এভাবে অনুপস্থিত থাকলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। বাবুল আক্তার চাকরিতে ফিরবেন কি ফিরবেন না বা ফিরতে চাইলেও তাকে ফিরতে দেওয়া হবে কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ও সংশয় আছে জনমনে। যে প্রশ্নটির উত্তর মিলছে না সেটা হচ্ছে- মিতু হত্যার নেপথ্যের কারণ নিয়ে। এটা আলোর মুখ দেখেনি। বিশ্লেষকদের মতে সবকিছু বের হওয়ার পরও যখন কারণ নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয় সেটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত-আর উদ্দেশ্য প্রণোদিত তেমন কিছু হলে সেটা আলোর মুখ দেখার সম্ভাবনা কম থাকে। ২৫ জুন বাসা থেকে নিয়ে আটকে রেখে বাবুলকে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেই ১৫ ঘণ্টার কাহিনীও জানা যায়নি। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার বরাদ দিয়ে একাধিক জাতীয় দৈনিকে সংবাদ বেরিয়েছে, ‘বাবুলের কাছে থেকে বিস্ময়কর তথ্য’ ‘আমরা বিস্মিত হয়েছি’ ‘ধারনা করতে পারিনি’ বাবুলকে হয় চাকরি ছাড়তে হবে নয় জেলে যেতে হবে’ এ ধরনের টুকরো টুকরো মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। কি বিস্ময়কর তথ্য, কেন হত্যার কারণ নিয়ে ধুম্রজাল, যার খেয়ে পড়ে এবং প্রশ্রয় ধন্য-তার স্ত্রীকেই কেন হত্যা করবে মুছা, মুছা এখন কোথায়? এসবসহ নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে- যার উত্তর নেই। উত্তর না থাকায় এ বিষয়ে জনমনে আগ্রহেরও কমতি নেই। সুতরাং বাবুল চাকরিতে যোগদান করতে যাবেন নাকি যোগদান করতে দেওয়া হচ্ছে না এসব প্রশ্নেরও কোনো জবাব নেই। এ ব্যাপারে গতকাল মুঠোফোনে বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, মেয়ে হারালাম। মেয়ে জামাইর চাকরিও অনিশ্চয়তায়। পত্র-পত্রিকায় যা ইচ্ছে তাই লিখে যাচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

পুলিশ সদর দফতরের একটি অসমর্থিত সূত্র থেকে আভাস পাওয়া গেছে- বাবুল আক্তারের যোগদানের প্রশ্নে পুলিশের ভাবমূর্তির বিষয়টি জড়িত। তাই পুলিশের বড় একটি অংশ চাইছে না বাবুল আক্তার ফিরুক। অন্যদিকে বাবুলের পক্ষের অংশটি চাইছে বাবুল আক্তার নামকাওয়াস্তে যোগদান করে ডিপার্টমেন্টে নয় ডেপুটেশনে অন্য কোথাও কাজ করুক যাতে অন্তত চাকরিটা থাকে।



মন্তব্য চালু নেই