পূর্বাচলে হচ্ছে ১০০ তলা কনভেনশন সেন্টার

প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক কনভেশন সেন্টার ও এক্সিবিশন সেন্টার কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

প্রায় ১০০ তলা ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কেপিসি গ্রুপ। ২০১৬ সালের মধ্যে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

রোববার কেপিসি গ্রুপের প্রধান বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ড. কালি প্রদীপ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ তথ্য জানান। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে অর্থমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তাবিত কনভেনশন সেন্টার ও এক্সিবিশন সেন্টারের নকশাসহ বিভিন্ন বিষয় পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থান করা হয়।

ঢাকার অদূরে কেরনীগঞ্জে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার ও এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে এর আগে বেশ কয়েক বার বৈঠক হয়েছে। শুরুতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চীনকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তারা রাজিও হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক কেপিসি ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ড. কালি প্রদীপ চৌধুরী জন্মসূত্রে বাংলাদেশি। সিলেটের এই ধনাঢ্য ব্যক্তি দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগ্রহ দেখান।

সূত্র জানায়, এরই মধ্যে বেশ কটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার অর্থমন্ত্রী ও ড. কালি প্রদীপ চৌধুরী প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত কেরানীগঞ্জে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে ফিরে তারা অর্থমন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেন।

বৈঠকে অর্থমন্ত্রী ছাড়াও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, প্রধান প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কেপিসি গ্রুপের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ঢাকার কাছাকাছি একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন ও এক্সিবিশন সেন্টার স্থাপনের জন্য জায়গা নির্বাচনের জন্য পূর্ত সচিবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রেল মন্ত্রণালয় ও সড়ক বিভাগের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।

বৈঠকে শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে কেরানীগঞ্জে কনভেনশন সেন্টারটি নির্মাণের চিন্তা করা হলেও কিছু কারিগরী সমস্যার কারণে শেষ পর্যন্ত পূর্বাচলে কনভেনশন সেন্টার নির্মাণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। কারণ কেরানীগঞ্জে যে স্থানটি নির্ধারণ করা হয়েছিল সেখানকার ভূ-প্রকৃতি প্রস্তাবিত প্রকল্পের উপযোগী নয়। সেখানে ১০০ তলা ভবন নির্মাণ করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, পূর্তমন্ত্রণালয় পূর্বাচলে ৪০ একর জায়গা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিনিয়োগকারীদের অবশ্য আরো বেশি জমির চাহিদা ছিল। পূর্বাচলে এরই মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। কাজেই পূর্বাচলেই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারী সংস্থাও এ বিষয়ে রাজি হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বহুতল বিশিষ্ট বেশ কটি বড় ভবন হবে। কনভেনশন সেন্টার ছাড়াও প্রকল্প এলাকায় আন্তর্জাতিকমানের হাসপাতাল, হেলিপ্যাড, স্টেডিয়াম, সুইমিংপুল, গলফ মাঠ, বয়স্কদের নিবাস, শপিংমলসহ নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে।

তিনি বলেন, আগামী ৪০ দিনের মধ্যে এর প্রাথমিক কাজ শুরু হবে। আশা করছি ২০১৬ সালের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০১৭ সালের মে-জুন মাসে যাতে এই প্রকল্পে ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের বার্ষিক সভা করা যায় সেই লক্ষ্যে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জানা গেছে, কনভেনশন সেন্টারে পাঁচ হাজার আসনের একটি গ্যালারি ও ৫০০ আসনের দুটি গ্যালারি থাকবে। থাকবে ২০০ আসনের ১০টি সেমিনার কক্ষ। প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীদের প্রায় ১০০টি দপ্তর থাকবে।

ক্যাফেটরিয়া, রেঁস্তোরা ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে উঠতে পারে। কাছাকাছি এলাকায় দুটি হোটেল, একটি শপিং প্লাজা ও একটি এক্সিবিশন হল রাখা হবে। থাকবে ৫০০ গাড়ি রাখার একটি পার্কিং ব্যবস্থা।



মন্তব্য চালু নেই