পায়ের গোড়ালির নীচে ব্যথা হওয়ার রহস্য জেনে নিন…

প্ল্যানটার ফেসাইটিস হচ্ছে পায়ের গোড়ালির নীচে ব্যথা হওয়ার একটি কারণ। এটি সময়ের সাথে সাথে চলে যায়। প্ল্যানটার ফেসিয়ার ব্যথা ও প্রদাহের জন্যই প্ল্যানটার ফেসাইটিস হয়। প্ল্যানটার ফেসিয়া হচ্ছে শক্তিশালী পুরু একদল টিস্যু বা লিগামেন্ট। এটি গোড়ালি থেকে পায়ের পাতার মধ্যবর্তী হাড়ের সাথে যুক্ত থাকে। এটি ঘাত প্রশমক হিসেবে কাজ করে। সাধারণত দৌড়বিদদের প্ল্যানটার ফেসাইটিসে ভুগতে দেখা যায় বেশি।

গোড়ালির ব্যথার সবচেয়ে কমন কারণ হচ্ছে প্ল্যানটার ফেসাইটিস। এটি সাধারণত সকালে প্রথম পদক্ষেপ ফেলার সময়ই অনুভূত হয় ছুরিকাঘাতের মত। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে বা বসা অবস্থা থেকে দাঁড়ালে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। যদি পায়ের পাতার ব্যথা রাতে হয় তাহলে তা আরথ্রাইটিস বা স্নায়ুর সমস্যার কারণে হয়। সাধারণত ৪০-৭০ বছর বয়সের মানুষদের প্ল্যানটার ফেসাইটিস হয়ে থাকে। সাধারণত পুরুষের চেয়ে নারীদেরই প্ল্যানটার ফেসাইটিসে বেশি ভুগতে দেখা যায়। প্ল্যানটার ফেসাইটিস এর লক্ষণ, কারণ, রোগনির্ণয় ও প্রতিকারের বিষয়ে জেনে নিই চলুন।

প্ল্যানটার ফেসাইটিস এর লক্ষণ :

– পায়ের পাতায় সূক্ষ্ম ও একতরফা ব্যথা হয়।

– ঘুম থেকে উঠার পর বিছানা থেকে প্রথম পা ফেলতে গেলেই এই ব্যথা হয়।

– একাধারে অনেকক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকলে এই ব্যথা হয়।

– সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় ব্যথা করে।

– দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে এই ব্যথা হয়।

– ব্যায়াম করলে ব্যথা কমে যায় অথবা একেবারে ভালো ও হয়ে যেতে পারে। ব্যায়ামের শেষে আবার ব্যথা ফিরেও আসতে পারে।

– গোড়ালি ফুলে যাওয়া, অসাড়তা ও টন টন করা ব্যথা হয়।

প্ল্যানটার ফেসাইটিস এর কারণ :

– অনেক বেশি হাঁটলে বা দৌড়ালে অথবা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে হয়।

– শক্ত জায়গায় ব্যায়াম করলে।

– স্থূলতার জন্য হতে পারে। কারণ এতে পায়ের লিগামেন্টের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

– প্রেগনেন্সির সময়ে নারীরা এই সমস্যাটির সম্মুখীন হতে পারে।

– ফ্যাক্টরিতে কাজ করে এবং ওয়েটারদের এই রোগটি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

– গোড়ালি বেশি উঁচু হলে বা পায়ের পাতা বেশি ফ্ল্যাট হলে এই সমস্যাটি হতে পারে।

– নরম সোলের জুতা পরলেও এমন হতে পারে।

প্ল্যানটার ফেসাইটিস নির্ণয় করা :

– ফিজিওথেরাপিস্ট আপনার হাঁটা লক্ষ করবেন এবং আপনার আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারেন কিনা তা লক্ষ করবেন।

– পায়ের পেছনের মাংসল পেশীতে চাপ দিয়ে পরীক্ষা করবেন।

– এমআরআই, এক্সরে, আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমেও রোগ নির্ণয় করা যায়।

প্ল্যানটার ফেসাইটিস এর ঘরোয়া প্রতিকার :

– বিশ্রাম নিতে হবে এবং ভারী জিনিস উঠানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

– আইস প্যাক ব্যবহার করলে ব্যথা ও ফোলা কমে।

– ঘুমানোর সময় পায়ের নীচে বালিশ দিয়ে রাখতে হবে।

– ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শে ব্যথা কমানোর স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।

– যদি ব্যথা বেশি হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি পেইনকিলার যেমন- নেপ্রক্সেন বা ইবোপ্রুফেন গ্রহণ করা যায়।



মন্তব্য চালু নেই