পবিত্র ঈদুল আজহা আজ

মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল আজহা আজ। ত্যাগের মহিমায় রাজধানীসহ সারাদেশে ঈদের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। নাড়ির টানে ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ছেড়েছেন হাজারো মানুষ। ঈদের হাওয়ায় রাজধানী এখন ফাঁকা। ঈদুল আজহার ছুটি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

এবারের কুরবানির ঈদে নির্ধারিত তিনদিনের ছুটির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে আরো একদিন যুক্ত হওয়ায় এবার টানা ছয় দিনের ছুটি পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। অর্থাৎ শুক্রবার থেকে বুধবার পর্যন্ত টানা ছুটি পাচ্ছেন তারা।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

রাজধানী বিভিন্ন এলাকায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ঈদ জামাতে নামাজ আদায়ের প্রস্তুতিও ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ ও বায়তুল মোকাররমসহ ঢাকার চার শতাধিক স্থানে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবার। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দেশের প্রধান ঈদ জামাত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।

গুলশানে জঙ্গি হামলা ও শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের পাশে গত ঈদে জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে এবারের ঈদে সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপক জোরদার করেছে প্রশাসন। ঈদগাহে জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু না নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। কুরবানির পশু কেনা-বেচার জন্য পশুর হাটগুলোতেও ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয়।

আল্লাহ পাকের প্রতি অপার আনুগত্য এবং তাঁরই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানির রেওয়াজ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রাণপ্রিয় সন্তান হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এই অনন্য ঘটনার স্মরণে কুরবানি প্রচলিত হয়।

ইসলামের পরিভাষায় কুরবানি হলো- নির্দিষ্ট পশুকে একমাত্র আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁরই নামে জবেহ করা। মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে জবাই করা পশুর মাংস বা রক্ত কিছুই পৌঁছায় না, কেবল নিয়ত ছাড়া। ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে, মনের পশু অর্থাৎ কু-প্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা।

জাতীয় কবির ভাষায় : মনের পশুরে কর জবাই, পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই..’।

হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে বিশ্ব মুসলিম ময়দানে নামাজ আদায়ের পর যার যা সাধ্য ও পছন্দ সেই অনুযায়ী পশু কুরবানি দিয়ে থাকেন। আরবি ‘আজহা ’এবং ‘কুরবান’ উভয় শব্দের অর্থ হচ্ছে উৎসর্গ। কুরবানি শব্দের উৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, নিজেকে বিসর্জন, নৈকট্য লাভের চেষ্টা ও অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া ইত্যাদি।

জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোনো একদিন কুরবানি করা যায়। গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এ শ্রেণির প্রাণি কুরবানি করা যায়।



মন্তব্য চালু নেই