ঢাকা থেকে নতুন রেলপথে চট্টগ্রাম, সময় বাঁচবে চার ঘণ্টা

ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়ে রেল যাত্রীরা চট্টগ্রামে পৌঁছবে তিন ঘণ্টায়। এ লক্ষ্যে সরকার একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে। এ জন্য নতুন একটি রেললাইন তৈরি হবে। নরসিংদী, ভৈরবের বদলে নারায়ণগঞ্জ হয়ে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত সরাসরি লাইন টানা হবে।

ভৈরব-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে চট্টগ্রাম যেতে এখন ৩৪৬ কিলোমিটার পথ পারি দিতে হয় ট্রেনকে। কোথাও না থামলেও এই পথ পারি দিতে সাড়ে ছয় থেকে সাড়ে ছয় ঘণ্টারও বেশি লাগে। নারায়ণগঞ্জ হয়ে লাকসাম পর্যন্ত নতুন লাইন হলে এই দুরত্ব ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি কমবে। ভৈরব দিয়ে লাইনে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার হলেও নতুন পথে তা বেশি হবে বলে জানিয়েছেন রেলের কর্মকর্তারা। ফলে নতুন পথে প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়া যাবে তিন ঘণ্টা বা কিছু বেশি সময়ে।

চীন সরকারের অর্থায়নে এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়ার পর চীনা একটি কোম্পানির সঙ্গে এরই মধ্যে সমঝোতা সই হয়েছে। অর্থায়ন নিশ্চিত হওয়ার পর প্রকল্পটির অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে।

রেল বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পর্যন্ত এমনিতেই একটি রেললাইন আছে। মেঘনা নদীর বাধা দূর করতে পারলে সরাসরি কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত লাইন টেনে নেয়া যায়। এই পথে রেল লাইন স্থাপনে দুটি বড় সেতু করতে হবে মেঘনা এবং গোমতী নদীর ওপর। প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরেই পরিকল্পনায় থাকলেও অর্থাভাবে এগিয়ে নেয়া যায়নি। তবে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং চীনা সহায়তার আশ্বাস মেলায় এবার সে পথে এগুচ্ছে রেল মন্ত্রণালয়।

ফতুল্লা থেকে লাকসাম পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপনে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ-সিআরইসির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর চীনা একটি প্রতিষ্ঠানকে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। এই কাজ শেষে প্রাথমিক একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন বলেন, ‘সম্বাব্যতা যাচাইয়ের প্রাথমিক সারমর্ম প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অনুমোদন দিলে আমরা এর পরবর্তী প্রদক্ষেপ নেব’।

রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, লাকসাম হয়ে চট্টগ্রাম রেলপথটি এলিভেটেড এক্সওয়ে হবে নাকি দেশের প্রচলিত রেললাইনে এটি নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরে পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হবে। তাদের পরামর্শমতে এটি হয়তো কিছু জায়গায় এলিভেটেড কিংবা কিছু জায়গায় প্রচলিত রেলপথও হতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই