ঝালকাঠির কিছু খবর :

ঝালকাঠিতে ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে দূর্নীতির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

ঝালকাঠি শহরের পশ্চিম চাঁদকাঠিতে আব্দুল ওয়াজেদের নামে ওয়াকফ সম্পত্তিতে দখল করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে সম্পত্তির বর্তমান মোতাওয়াল্লী দাবীদার মনিরুল ইসলাম। আব্দুল ওয়াজেদ কে নিজের দাদা পরিচয় দিয়ে মনিরুল ইসলামের বুধবার সকাল ১০ টায় শহরের কালিবাড়ি সড়কে একটি অফিসে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ওয়াজেদ ও তার স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার পুত্র বধূ আকিকুননেছা ওরফে তাহেরুন্নেছা ওয়াফিক এর দলিল সুত্রে ওয়াকফ সম্পত্তির মোতাওয়াল্লী নিযুক্ত হন। তার মৃত্যুর পর তার কন্যা মোসা: লুৎফুন্নেছা মোতাওয়াল্লী নিযুক্ত হন। তিনি বৃদ্ধা ও অসুস্থ হাওয়ার কারন দেখিয়ে মোতাওয়ালী পদ থেকে অব্যাহতি নেন।

এরপর মনিরুল ইসলাম ১ম ওয়াফিক দলিলের ১৩নং শর্ত অনুয়ায়ী দাদার বংশধর হিসাবে মোতাওয়াল্লী দায়িত্বভার গ্রহনের জন্য গত ১০ মার্চ ২০১০ সনে বাংলাদেশ সরকারের ওয়াকফ প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মাঠ পর্যায় তদন্ত শেষে গত ২৪ নভেম্বর ২০১১ সনে তাকে ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের জেলার ৫.৭৭ একর সম্পত্তির মোতাওয়াল্লী নিযুক্ত করা হয়। যার স্মারক নং ও:প্র:বরি:/ ৩৬৫ তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৫। ইং সেই থেকে তিনি মোতাওয়ালী হিসাবে নিযুক্ত রয়েছেন।

অন্যদিকে পূর্বের মোতাওয়াল্লী আকিকুননেছা ওরফে তাহেরুন্নেছা ও তার কন্যা লুৎফুননেছা স্থানীয় ভুমিদস্যু মাসুদ হোসেন বাদলের সহায়তায় সরকারের ওয়াকফ এর বিশাল সম্পত্তি জাল -জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া বিক্রয়ের অনুমতিপত্র তৈরী করেন। তারা বাংলাদেশ সরকারের ওয়াকফ প্রশাসকের এবং ধর্ম মন্ত্রনালয়ের চোখে ধূলা দিয়ে ১৯৮০, ১৯৮৯ এবং ১৯৯৪ সালে এই সম্পত্তি বিক্রয় করে রেজিষ্ট্রী করে দিয়ে সমুদয় টাকা আত্মসাত করে।

আকিকুনন্নেছার মৃত্যুর কয়েক বছর পর তার কন্যা লুৎফুন্নেছা মোতাওয়াল্লী হিসাবে গত ৩ জুন ২০০৮ সনে ঝালকাঠির চাঁদকাঠি মৌজার মোট .২৯ শতাংশ জমি বিক্রির অনুমতিপত্র বের করেন। যার নং ও:প্র:বরি:২৫৬। এই অনুমতিপত্রটি ওয়াকফ প্রশাসকের প্রথম অনুমতিপত্র। এর আগে তিনি কোন অনুমতিপত্র দেন নাই। এই ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করতে গিয়ে দেখা যায় তার মা আকিকুনন্নেছা জাল-জালিয়াতি মাধ্যমে ভূয়া অনুমতিপত্র বের করে ইতিপূর্বেই জমি বিক্রি করে গেছেন।

বিষয়টি ধরা পরার ভয়ে লুৎফুন্নেছা সুকৌশলে নিজকে একজন বৃদ্ধা অসুস্থ দেখিযে মোতাওয়ালী থেকে অব্যহতি নেন। তাই সমূদয় সম্পত্তি রক্ষা ও উদ্ধারের জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমাকে অনুমতি প্রদান করা হয়। তাই আমি বাদী হয়ে ওয়াকফ সম্পত্তির রেজিষ্ট্রীকৃত দলিল বাতিল চেয়ে পর্য়ায়ক্রমে ঝালকাঠি জজ আদালতে ৫টি মামলা দায়ের করি। যার নং- ৫৮/১২, ১৫৯/১৩,১৬০/১৩, ২০১/১৩, ২৫/১৪ )। এসব মামলা বর্তমানে বিচারাধীন।

এই সম্পত্তিতে পরিচালিত স্যাংগুইন ইংলিশ মিডিয়াম শিশু বিদ্যালয় পরিচালিত হয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের পরিচালক শাহিন খলিফা ভাড়াটিয়া হিসেবে সম্প্রতি মোতাওয়াল্লী হিসেবে আমার সাথে চুক্তিপত্রে আবদ্ধ হন। কিন্তু গত ৮ জানুযায়ী মাসুদ হোসেন বাদল গং একদল সন্ত্রাসীদের নিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে আসবারপত্র ভাংচুর করে দখল নেয়। ওয়াফিক দলিলের বিধান লংঘন করে এই সম্পত্তির মালিকের বংশধর না হয়েও মিথ্যা পরিচয়ে বাদল ওয়াকফ সম্পত্তির মোতাওয়াল্লী হবার চেষ্ঠা চালচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

 

 

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ
ঝালকাঠিতে প্রথম আলো সম্পাদকসহ ২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও একই পত্রিকার ফটো সাংবাদিক মজিদ খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বুধবার দুপুর ১২টায় ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আরিফুজ্জামান এ আদেশ দেন।

২০০৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর রম্য ম্যাগাজিন আলপিনে হয়রত মুহাম্মদকে (সা:) নিয়ে ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও একই পত্রিকার ফটো সাংবাদিক মজিদ খানের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে ঝালকাঠির আদালতে গত বছরের ৯ অক্টোবর একটি নালিশি মামলা দায়ের করেন এপিপি এড. বনি আমিন বাকলাই।

বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও ফটো সাংবাদিক মজিদ খানকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য তাঁদের প্রতি সমন জারির আদেশ দেন। তিনটি নির্ধারিত তারিখ অতিবাহিত হলেও তাঁরা আদালতে হাজির না হওয়ায় বুধবার আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বলে জানান আইনজীবী আনোয়ারুল ইসলাম খোকন। বিবাদীদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী প্রথম আলো’র ঝালকাঠি প্রতিনিধি আককাস শিকদার।

মামলার আরজিতে বাদী দাবি করেন, ২০০৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর রম্য ম্যাগাজিন আলপিনে হয়রত মুহাম্মদকে (সাঃ) নিয়ে ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেন মতিউর রহমান। ২০১৩ সালের ১১ মার্চ একই পত্রিকার রস+আলো ম্যাগাজিনের পাঁচ’র পাতায় ‘বসন্তের কোকিল যখন যা বলেন শিরোনামে এক লেখায় সুবিধাবাদী লোকদের চরিত্র তুলে ধরতে গিয়ে মতিউর রহমান পবিত্র কোরানের সুরা লোকমানের ২৭ নং আয়াতের অর্থ হুবহু তুলে দেন। শুধু আল¬াহ তায়ালার গুণ বর্ণনার জায়গায় সরকারের গুণের কথা লিখে দেন।

এছাড়াও গত বছর ৫ জানুয়ারি প্রথম আলোর অনলাইনে সারিবদ্ধভাবে হিন্দু নারীরা একটি ভোট কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন দেখাতে গিয়ে সম্পাদক মতিউর রহমান এবং ফটো সাংবাদিক মজিদ খান ফটোশপের মাধ্যমে বেশ কিছু নারীদের কপালে লাল টিপ ও সিঁদুর দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন নির্বাচনে মাত্র ১০% ভাগ ভোট পড়েছে এবং যাদের বেশির ভাগই হিন্দু ভোটার। বাদি বনি আমিন বাকলাই বলেন, আদালতের দেওয়া সমন গ্রহণ না করায় প্রথম আলো সম্পাদক ও একজন ফটো সাংবাদিকের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

 

 

নলছিটিতে বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা
বরিশাল-পটুয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া চৌরাস্তায় একটি যাত্রীবাহী বাসে মঙ্গলবার রাতে আগুন দেয় অবরোধ সমর্থকরা। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

স্থানীয়রা জানান, আবদুল্লাহ পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস পটুয়াখালীর কুয়াকাটা যাচ্ছিল। রাত ১টার দিকে বাসটি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া চৌরাস্তায় পৌঁছালে অবরোধকারীরা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। এ সময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লে বাসটি সেখানে থামানো হয়। যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে বাস থেকে নেমে পড়লে অবরোধকারীরা ভাঙচুর করে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে বরিশাল ও নলছিটি থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) মাকসুদ জানান, দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে বাসটি পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় নলছিটি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অপরদিকে ঝালকাঠির বৈদারাপুর বিদ্যালয় সংলগ্ন মোড়ে মঙ্গলবার রাতে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধের চেষ্টা করে ২০ দলের নেতাকর্মীরা। পিরোজপুরের দিক থেকে আসা মুগডাল ভর্তি একটি ট্রাক গাছের গুড়ি অতিক্রম করে যেতে চাইলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গাছের সাথে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা কবলিত হয়। এতে ট্রকটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। টানা অবরোধের কারণে ঝালকাঠি থেকে দূরপাল্লার সকল ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণের।

 

 

প্রশাসনিক কারণে
নলছিটি থানার ওসি আবুল খায়ের প্রত্যাহার

ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার ওসি আবুল খায়ের খায়েরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রশাসনিক কারণে তাকে বুধবার সকালে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোঃ মজিদ আলী।

মঙ্গলবার রাতে নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া চৌরাস্তায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় অবরোধ সমর্থকরা। এছাড়াও ১০ জানুয়ারি রাতে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে ভেতরে প্রবেশের দরজায় আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরের দিন সকালে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা নাশকতার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।

নিন্দনীয় এ নাশকতা রাতে ঘটলেও নলছিটি থানার ওসি আবুল খায়ের ঘটনাস্থলে আসেন পরদিন বিকেলে। ঘটনাটি মিডিয়ায় প্রকাশেও সাংবাদিকদের তিনি নিরুৎসাহিত করেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিতেও তিনি অবহেলা করেন বলে মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করে ১৩ জানুয়ারী বিক্ষোভ মিছির ও সমাবেশে নলছিটি থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

এ দু’কারণে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে নলছিটির সচেতনমহল ধারণা করছে। ঝালকাঠি পুলিশ সুপার মোঃ মজিদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, প্রশাসনিক কারণে নলছিটি থানার ওসি আবুল খায়েরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই