ছিটমহল বিনিময় হতে পারে মোদির সফরে

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দমোদর দাস মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে পারে ছিটমহল বিনিময় প্রক্রিয়া। এ ছাড়া মানবপাচার রোধে ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করার জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি করে ছিটমহল হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক আয়োজন সম্পন্ন করার জন্য বলা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া মানবপাচার সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষর হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে করণীয় নির্ধারণ করতে ১৩ মে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়। মোদীর বাংলাদেশ সফরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উল্লেখ করে গত সপ্তাহে ওই চিঠি পাঠানো হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ আছে, মোদির সফরে জালটাকা রোধ ও উভয় দেশের কোস্টগার্ডের সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সারদা পুলিশ একাডেমীতে ভারতীয় অনুদানে নিয়মিত আইটিল্যাবের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথাও চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।

মে মাসের প্রথম সপ্তাহে (৬ ও ৭ মে) ভারতের রাজ্যসভা ও লোকসভায় বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল পাস হয়। দেশটির সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পাস হওয়া এ বিলের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান ছিটমহল সমস্যার সমাধানে যুগান্তকারী সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

ছিটমহল বিনিময়ে ১৯৭৪ সালের ১৬ মে দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রটোকল চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে ভারত ও বাংলাদেশ নিজ নিজ দেশের অভ্যন্তরে ছিটমহল বিনিময়ে সম্মত হয়।

দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল ও অপদখলীয় জমি বিনিময় এবং সাড়ে ৬ কিলোমিটার সীমান্ত চিহ্নিত করাই এই স্থলসীমান্ত চুক্তির লক্ষ্য৷ এর মাধ্যমে সাড়ে ৬ কিলোমিটার অচিহ্নিত সীমানা চিহ্নিত করা হবে৷

ছিটমহলগুলোর মধ্যে ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি (৭ হাজার ১১০ একর জমি) এবং বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ১১১টি (১৭ হাজার ১৬০ একর) জমি বিনিময় হবে৷

এ ছাড়া অপদখলীয় জমির মধ্যে মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অধীন সীমান্তে ২,০০০ একর জমি এবং আসামের ২৬৮ একর জমির অধিকারী হবে বাংলাদেশ৷

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বন্ধুদেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসবেন। দুই দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বেশকিছু বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। আরও অনেক বিষয়েই প্রস্তুতি থাকছে। তবে সে সব আগে থেকে বলতে চাচ্ছি না।



মন্তব্য চালু নেই