খন্দকারের বইটি ‘বিভ্রান্তিকর’

একে খন্দকারের লেখা ১৯৭১: ভেতরে বাইরে বইটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশজুড়ে। এ বইয়ের লেখক এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বীর উত্তম যদিও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের চেয়ারম্যান কিন্ত এ বইয়ের বিভিন্ন বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে মনে করছেন সংগঠনটির অনেক নেতাই।

শনিবার এক যুক্ত-বিবৃতিতে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হারুন হাবীবসহ ২১ জন নেতা ওই বইয়ের নানা বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে তারা আশঙ্কা করছেন, ‘বইটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতিতে লিপ্ত দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের হাতে বিভ্রান্তি ছড়াবার নতুন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।’

এ বইয়ের দ্রুত তথ্য সংশোধন ও পরিমার্জনের আহ্বান করেন তারা।

যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে জানাতে চাই যে, সেক্টর কমান্ডার্ম ফোরামের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বীর উত্তমের সদ্য প্রকাশিত ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বইটি একান্তভাবেই তার নিজস্ব। বইয়ের বক্তব্য ও মন্তব্যের সঙ্গে ফোরামের নীতি, আদর্শ ও ঐতিহাসিক সত্য উপলব্ধির মিল নেই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৩ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব ষ্টাফ একে খন্দকার তার বইতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ এর ২৬ মার্চ প্রদত্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা সম্পর্কে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যাকে আমরা চরম দুর্ভাগ্যজনক ও বস্তুনিষ্ট নয় বলে মনে করি। আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা একটি প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক সত্য যা সারা বিশ্বে সংরক্ষিত আছে। বইটিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সম্পর্কেও যে দাবি উত্থাপন করেছেন, তা বাস্তবতা বিবর্জিত।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরাচার ও শোষন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাতির ধারাবাহিক রাজনৈতিক সংগ্রাম ও গণমানুষের আত্মত্যাগের চূড়ান্ত পরিণতি, যার মূখ্য নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু এ.কে. খন্দকার তার বইতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে জাতির গৌরবোজ্জ্বল সেই ঘটনাবলির ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সফল রাজনৈতিক নেতৃত্বের যোগ্যতা ও দূরদর্শিতা সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলেছেন, যা আমাদের হতবাক করেছে।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) কে.এম. সফিউল্লাহ বীর উত্তম, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত বীর উত্তম, ভাইস চেয়ারম্যান লে.কর্ণেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী, সহ-সভাপতি কর্নেল (অব.) সামসুল, যুগ্ম
মহাসচিব ম. হামিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ মেজর জেনারেল (অব.) শাহজাহান, আন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল আলম শহীদ, কেন্দ্রিয় নির্বাহী সদস্য মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোহা. আব্দুল হাই, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক
আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ক্যাপ্টেন শাহাব ইউ আহমেদ বীর উত্তম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ বীর উত্তম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সৈয়দ সদরুজ্জামান হেলাল বীর প্রতীক, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সৈয়দ দিদারুল আলম, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ড. মমতাজউদ্দিন পাটোয়ারী, হাফেজ মৌলানা জিয়াউল হাসান,তুষার আমীন।



মন্তব্য চালু নেই