কারাগারে সাক্ষাত শেষ করলেন পরিবারের সদস্যরা

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তোড়জোড়ের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখা করে এলেন তার পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে তিনটি গাড়িতে নিজামীর পরিবারের সদস্যরা কারা ফটকে পৌঁছান। প্রায় দেড় ঘণ্টা কারাগারের ভেতরে অবস্থান করার পর ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে কারাগার থেকে বেরিয়ে চলে যান তারা।

নিজামীর সঙ্গে দেখা করতে তার পরিবারের মোট ২৪ জন সদস্য কারাগারের এসেছিলেন। নিজামীর সঙ্গে এটিই তার পরিবারের শেষ সাক্ষাৎ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, কারাগারের পৌঁছানোর আগে নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন জানিয়েছিলেন, দুদিন আগে পরিবারের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কারা কর্তৃপক্ষ তখন কোনো সাড়া দিয়েছিল না। তবে আজ বিকেলে কারা কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে।

পরে রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিবিসি বাংলাকে জানান, প্রাণভিক্ষা চাননি নিজামী।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে দণ্ডিত ব্যক্তিকে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের রেওয়াজ রয়েছে। এরজন্য কারা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে পরিবারের সদস্যদের ডাকে। নিজামীর পরিবারের সদস্যদের কারা কর্তৃপক্ষ ডেকেছে- নিশ্চিতভাবে এমন খবর পাওয়া যায়নি।

অবশ্য মঙ্গলবার কারা ফটকের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার ও কারাগারের আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ আজ রাতেই দণ্ড কার্যকরের আবহ তৈরি করেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিকেলের দিকে বলেছিলেন, ক্ষমা না চাইলে যেকোন মুহূর্তে দণ্ড কার্যকর করা হবে। অন্যদিকে নিজামীর আইনজীবী গতকাল ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন না নিজামী। এর আগে সাবেক মন্ত্রী জামায়াতের আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিলেন। তবে রাষ্ট্রপতি ওই আবেদন প্রত্যাখান করেছিলেন।

সব মিলিয়ে কারাগারের সামনে আজ রাতেই দণ্ড কার্যকরের আবহ বিদ্যমান থাকলেও এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলছেন না। সর্বশেষ জামায়াতের আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর দণ্ড কার্যকরের সময়ও একই ধরনের পরিস্থিতির অবতারণা হয়েছিল।

নিজামী হলেন পঞ্চম মানবতাবিরোধী অপরাধী ও তৃতীয় মন্ত্রী, যার সর্বোচ্চ সাজার রায় কার্যকরের পর্যায়ে এসেছে।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজামীয় সাজা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজের মধ্যে দিয়ে তার আইনি লড়াই শেষ হয়েছে। সাজা থেকে বাঁচতে এখন তার সামনে খোলা রয়েছে কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ।

গতকাল সোমবার দুপুরে নিজামীর রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারকদের সইয়ের পর বিকেলে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায় ওই রায়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে রায়ের অনুলিপি পৌঁছে দেয়া হয় কেন্দ্রীয় কারাগারে। রাতে তা পড়ে শোনানো হয় নিজামীকে।



মন্তব্য চালু নেই