আয়ারল্যান্ডে ধরাশায়ী উইন্ডিজ

আমুদে ক্যারিবিয়ানরা নেলসনের অপরূপ সৌন্দর্য্যে পার্টির মেজাজেই ছিল। তখন ড্যারেন সামি-লেন্ডন সিমন্সদের ব্যাটিং উচ্ছ্বাসে ঢেউ উঠছিল গ্যালারিতে। কিন্তু উইন্ডিজের উৎসবের সেই রঙ থামাতে খুব বেশি সময় নেয়নি আইরিশরা। দিনের শুরু আর শেষটা এক চিত্রলিপিতে মিলিয়ে আরেকটি অবিশ্বাস্য রূপকথা লিখেছে উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড বাহিনী। সোমবার স্যাক্সটন পার্কের মহারণে ‘দৈত্য’ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে আইরিশরা। আর উপহার দিয়েছে এই বিশ্বকাপের প্রথম অঘটনের।

অবশ্য ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে অর্থাৎ বিশ্বকাপে আইরিশদের সাফল্য বিস্ময় জাগানিয়া কোনো কিছু নয়। এমনিতে আইসিসির সহযোগী দেশ হলেও বিশ্বকাপে এলে পূর্ণ সদস্যের দলগুলোকে কাঁপিয়ে দেয়া তাদের পুরনো অভ্যাস। ২০০৭ সাল থেকে এই রীতি ধরে রেখেছে আয়ারল্যান্ড। সেবার বিশ্বকাপ অভিষেকে পাকিস্তানকে হারিয়ে ‘দৈত্য হন্তারক’ বা ‘জায়ান্ট কিলার’ তকমা পেয়েছিল আইরিশরা। পরে নাম লিখিয়েছিল সুপার এইটেও। এরপর গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ভিন্ন এক ইতিহাস রচনা করে পুঁচকে এই দেশটি। চার বছর বাদে আরেকটি বিশ্বকাপে নেমে আবারো স্বরূপে অ্যাড জয়েস-নেইল ও’ব্রায়েনরা। প্রথম ম্যাচেই তারকা সমৃদ্ধ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চমকে দিল তারা।

নেলসনে অঘটনের পূর্বাভাস ছিল দিনের শুরুতেই। হ্যাঁ, এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুতেই নুয়ে পড়ে দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৩.৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৮৭ রান যোগ হতে না হতেই সাজঘরে ফেরেন দলটির পঞ্চপাণ্ডব ডোয়াইন স্মিথ (১৮), ক্রিস গেইল (৩৬), ড্যারেন ব্রাভো (০), মারলন স্যামুয়েলস (২১) ও দিনেশ রামদিন (১)। এরপর ফিনিক্স পাখির মতো ধ্বংসস্তুপ থেকে জেগে ওঠার চেষ্টা চালান লেন্ডন সিমন্স ও ড্যারেন সামি। প্রাথমিকভাবে সেই চেষ্টায় সফলও এই জুটি। ষষ্ঠ উইকেটে ১৫৪ রান যোগ করেন তারা। ৮৪ বলে ১০২ রান করে সোরেনসেনের শিকার হন সিমন্স। ৬৭ বলে ৮৯ রান করে মুনির হাতে আউট হন সামি। তাতে করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ৩০৪ রান সংগ্রহ হয় ক্যারিবিয়ানদের।

এরপর বড় লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা করে আয়ারল্যান্ড। উদ্বোধনী জুটিতে পল স্টারলিং ও উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড ৭১ রান সংগ্রহ করেন। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে স্টারলিং-অ্যাড জয়েস জুটি এবং পরে জয়েস-নেইল ও’ব্রায়েন জুটি আইরিশদের আরেকটি অবিস্মরনীয় জয়ের কক্ষপথে টেনে তোলে। তখন বিশাল জয়ের ছবিই আঁকছিল আইসিসির সহযোগী দেশটি। কিন্তু শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় একটি অপেক্ষা বাড়ে তাদের। দ্রুত চারটি উইকেট হারায় তারা। তারপরও চার উইকেটের জয় পায় আইরিশরা। দলটির পক্ষে সর্বোচ্চ ৯২ রান করেন স্টারলিং। নার্ভাস নাইনটিজে মারলন স্যামুয়েলসের শিকার হন আইরিশ ওপেনার। ৬৭ বলে ৮৪ রান করেন জয়েস। ৭৯ রান করে ফিনিশিং টাস দেন নেইল ও’ব্রায়েন। ৪৫.৫ ওভারে ২৫ বল বাকি থাকতে চার উইকেটের জয় পায় পোর্টারফিল্ড বাহিনী।



মন্তব্য চালু নেই