অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ঢাকার উদ্দেশে পারাপার করছে ভোলার লঞ্চ
ভোলার ২৫টি নৌ ঘাটে ঈদে কর্মমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। ঈদের পর এক সপ্তাহ বেরিয়ে গেলেও জেলা থেকে ঢাকাগামী ১৮টি লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা।
শনিবার বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে ধারণ ক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে লঞ্চগুলো। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের বিষয়ে প্রশাসনের অভিযান না থাকায় লঞ্চ মালিকরা কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যাত্রীদের নিয়ে গন্তব্যর উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, ঈদের আগে ও পরে যাত্রীদের জন্য বাড়তি কোনো লঞ্চের ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই যাত্রীরা ভোলা থেকে কর্মস্থল ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছেন। এতে প্রতিদিন কর্মমুখী হাজার হাজার যাত্রী চরম ঝুঁকির মধ্যে পার হচ্ছেন।
জানা গেছে, পর্যাপ্ত কল-কারখানা, গার্মেন্টস, উচ্চ পর্যায়ের অফিস-আদালতসহ সরকারি- বেসরকারি অফিস ও ছোট বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান না থাকায় ভোলার মানুষ ঢাকামুখী। রাজধানীতে ভোলার কয়েক লাখ মানুষ কাজ করছেন।
ঈদ এলে এসব মানুষ নিজ গ্রামের বাড়ি চলে আসেন আবার ছুটি শেষে ঈদের পরেই কর্মস্থলে চলে যান। কিন্তু ঈদের আগে ও পরে এসব মানুষের যাতায়াতের জন্য স্পেশাল সার্ভিস চালু হয়নি। তাই ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে যাতায়াত করছেন।
ভোলা সদরের খেয়াঘাট, তুলাতলী, কাঠির মাথা, ইলিশা, নাদের মিয়ারহাট, বিশ্বরোড, বঙ্গের চর থেকে থেকে ৮টি, দৌলতখান উপজেলার একটি ঘাট থেকে ২টি, বোরহানউদ্দিনের ৫টি ঘাট থেকে ২টি, মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ও রামনেওয়াজ ঘাট থেকে থেকে একটি, লালমোহন উপজেলার নাজিরপুর, খেয়াঘাট, মঙ্গল সিকদার ও ধলীগৌরনগর থেকে ২টি, চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া, লেতরা, ঘোষেরহাট ও সামরাজ থেকে ৪টি লঞ্চ ছেড়ে যায়।
তবে, তজুমদ্দিন থেকে নিজস্ব টাইমে কোনো লঞ্চ না থাকলেও একটি ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ২টি লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে।
শনিবার জেলার বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো। ঈদের ছুটি কাটিয়ে রোববারে কর্ম দিবসে কর্মস্থলে যোগ দিতে হাজার হাজার মানুষ অতিরিক্ত যাত্রী হয়েই লঞ্চে উঠছেন।
শনিবার বিকেলে ভোলা সদরের ইলিশা বিশ্বরোড ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ২ হাজারের অধিক যাত্রী ঢাকার উদ্দেশে যাওয়ার জন্য অপেক্ষমান। কিছুক্ষণ পরে এমভি কর্মফুলী ও এমভি ফ্লোটিলা নামে দুটি লঞ্চ ঘাটে নোঙর করে। তখন শত শত যাত্রী তড়িঘড়ি করে লঞ্চে উঠছেন। কেউ কেউ আবার ট্রলার নিয়েই লঞ্চে উঠার চেষ্টা করছেন।
লঞ্চগুলোর নিচ তলা থেকে ছাদ পর্যন্ত যাত্রীবোঝাই থাকলেও লঞ্চ কর্তৃপক্ষ আরও যাত্রী উঠিয়ে নিচ্ছেন। তবে, যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই আবার দুর্ঘটনার আশঙ্কায় লঞ্চ থেকে নেমে পড়ছেন।
লঞ্চের যাত্রী হোসেন, ছিদ্দিক, রুহুল আমিনসহ অন্য জানান, লঞ্চগুলোতে দাঁড়ানোর জায়গাই নেই, তবুও মানুষ লঞ্চে উঠছেন। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
আইরিন ও সাদিয়াসহ কয়েকজন লঞ্চযাত্রী জানান, লঞ্চে যাওয়া খুবই রিক্সের বিষয়, তাই অতিরিক্ত হয়ে লঞ্চে উঠিনি, ছোট ছোট মেয়ে- মেয়েদের নিয়ে যেতে খুবই ভয় লাগছিল।
ফেরদৌস বলেন, রোববার কারখানায় যেতেই হবে, তাই বাধ্য হয়ে লঞ্চে উঠছি, যাত্রীদের তুলনায় এ রুটে লঞ্চ খুব কম, তাই আমাদের কিছুই করার নেই।
মন্তব্য চালু নেই