অবশেষে মারা গেলেন প্রেমিক তুহিন

ঈদের দিন প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার অপরাধে দুই হাত বিচ্ছিন্ন ও চোখ উপড়ে ফেলা প্রেমিককে আর বাঁচানো সম্ভব হলো না। গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসাপতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার পথে শনিবার গভীর রাতে মাওয়া ফেরিঘাটে মারা যান প্রেমিক তুহিন মোল্লা (১৮)।

আপন চাচাত বোনের সঙ্গে প্রেম করার অপরাধে প্রেমিকার ভাইয়েরা ওই যুবকের শরীর থেকে দুই হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এ ছাড়া তার দুই চোখও উপড়ে ফেলা হয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে তুহিন মোল্লার বাবা শওকত আকবর মোল্লাকেও কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাথালিয়া গ্রামে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন মোল্লার বাবা শওকত আকবর মোল্লা বর্তমানে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বড় ভাই লায়েক মোল্লার মেয়ের সঙ্গে শওকত আকবর মোল্লার ছেলে তুহিন মোল্লার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু মেয়ের পরিবার বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না। ঈদের দিন বিকেলে তারা দু’জন বাড়ির বাইরে ঘুরতে যায়। বিষয়টি লায়েক মোল্লার ছেলেরা জানতে পেরে তুহিনকে ধরে এনে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে গরু কাটার চাপাতি দিয়ে দুই হাত কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে তারা তার দুই চোখও তুলে নেয়। এ খবর শুনে শওকত আকবর মোল্লা সেখানে গেলে তার দুই হাত ও দুই পা কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়।

অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। ঢাকা নেওয়ার পথে মাওয়া ফেরিঘাটে তুহিন মোল্লার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অনুপ কুমার মজুমদার বলেন, দুই হাত শরীর থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করায় এবং দুই চোখ উপড়ে ফেলায় তুহিন মোল্লার মৃত্যু হয়েছে। শওকত আকবর মোল্লার দুই হাত ও দুই পা শরীর থেকে কেটে ফেলতে হবে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন মোল্লা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকায় নেওয়ার পথে তুহিন মোল্লা গভীর রাতে মারা যান। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আপন চাচাত ভাই-বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে এ ঘটনা। প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার পর মেয়ের পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান তিনি।

আরো পড়ুনঃ

প্রেমিকের দু’হাত কেটে বিচ্ছিন্ন ও চোখ উপড়ে ফেলেলো প্রেমিকার ভাইয়েরা



মন্তব্য চালু নেই