যিনি আল্লাহর পথে থাকেন তার দায়িত্ব নেন স্বয়ং আল্লাহ, একটা বাস্তব উদাহরন দেখুন
নামাজ পড়ে সিদ্দিকের দোকানে চা খেতে বসলাম। এক লোক খুব হন্তদন্ত হয়ে একগ্লাস পানি চাইলো। দোকানদার মিলন মিয়া ব্যস্ত দেখে আমিই পানি ঢেলে দিলাম। জিজ্ঞেস করলাম- ভাই কোনো সমস্যা? ভদ্রলোক টুপি খুলতে খুলতে উত্তর দিলেন- খুব কষ্টে একটা টিকিট ম্যানেজ করেছিলাম। নামাজ পড়ে বের হতে হতে দেখি বাস ছেড়ে গেছে একটু আগে। লোকটার কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম। সান্তনা দেওয়ার কিছু একটা খুঁজছি। কি বললে মাঝবয়সী এই ভদ্রলোককে একটু নির্ভার করা যায়? বললাম- ভাই, হযরত আবু বকর সিদ্দিক (র) বলেছেন- আল্লাহ তাকেই সাহায্য করেন যিনি আল্লাহর পথে থাকেন। আপনি যেহেতু নামাজে গিয়েছিলেন সুতরাং আপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব আল্লাহই নিবেন আশা করি। ভদ্রলোক বাস কাউন্টারের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। সিঁড়িতে বসে একটা কলা আর একটা বনরুটি খেলেন।
ভদ্রলোকের ব্যাগের দিকে তাকালাম। বাচ্চাদের হাঁটা শেখানোর যন্ত্র (ওয়াকার), এক সেট খেলনা, আরো কিছু জিনিস। হয়তো সন্তানকে দেখার জন্য মন উদগ্রীব হয়ে আছে। হয়তো স্ত্রীকে বলে দিয়েছেন একত্রে সেহরি খাবেন। স্ত্রীও নিশ্চয়ই পছন্দের খাবারটা রান্না করে রাখবেন। ভাবছি একা একা। চা খাচ্ছি।
হঠাৎ বাসের কাউন্টারম্যান এর চিৎকার কানে গেলো- ঊনত্রিশ আশি’র যাত্রী কে ছিলেন জলদি আসেন, কাউন্টারে বাস ফেরত আইসে। ভদ্রলোক টিকিটে চোখ বুলিয়ে- দৌড়ে গেলেন। আমিও গেলাম পেছন পেছন। জানলাম- বাসের স্পেয়ার চাকা বক্সে ভরা হয়নি বলে ওটা নিতে কাউন্টারে ফেরত এসেছে বাস। ভদ্রলোক আমার সঙ্গে বুক মিলিয়ে বাসে উঠলেন। মুখে বেহেশতি হাসি। সূরা কদর এর শেষ আয়াতটা খুব মনে পড়ছে- ”এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।” বাস ছেড়ে গেলো। তাকিয়ে রইলাম অনেকক্ষণ পর্যন্ত।
[ আল নাহিয়ান ]
মন্তব্য চালু নেই