শিশু রাজন হত্যা : মুহিত রিমান্ডে, আরেক আসামি গ্রেফতার

খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন করে শিশু রাজন হত্যার আরেক আসামি ইসমাঈল হোসেন আবলুকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) জালালাবাদ থানা এলাকার লামাকাজি মিরেরগাঁও থেকে সোমবার ভোরে ইসমাঈলকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার ইসমাইল শিশু রাজন হত্যার প্রধান আসামি মুহিত আলমের তালতো ভাই।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন সোমবার সকালে  এ তথ্য জানান।

মুহিত রিমান্ডে

লাশ গুমের সময় জনগণের হাতে ধরা পড়া হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি মুহিত আলমের (৩২) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক ফারহানা ইয়াসমিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

জালালাবাদ থানার ওসি-তদন্ত আলমগীর হোসেন সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত পাঁচ দিন মঞ্জুর করেন।

আসামি গ্রেফতারে পুলিশের বিশেষ দল

পলাতক আসামিদের ধরতে ও মামলার কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পুলিশের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ওসি আকতার হোসেন জানান, এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহকে প্রধান করে চার সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয়।

রাতভর উত্তাল রাজনের গ্রাম, আল্টিমেটাম

রাজন হত্যার ঘটনায় ফুঁসে উঠছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে তারা প্রশাসনকে সময়ও বেঁধে দিয়েছেন। না হলে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন এলাকাবাসী।

রবিবার রাতে রাজনের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামে এলাকাবাসী বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ১৫-২০টি গ্রামের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

নির্যাতনকারী ঘাতকদের ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেন স্থানীয় এলাকাবাসী। রবিবার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চলা বৈঠক শেষে স্থানীয় এলাকাবাসী এ আল্টিমেটাম দেন।

সিলেট নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামে রাজনের বাড়ির আঙিনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকের খবর পেয়ে এসএমপির জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি রাজন হত্যাকারীদের গ্রেফতারে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

গত বুধবার সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে রাজনকে চুরির অপবাদ দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে রাজন মারা গেলে তার লাশ গুম করার চেষ্টাকালে পুলিশের হাতে আটক হয় মুহিত আলম।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মহানগরের জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় আটক মুহিত আলম (৩২) ও তার ভাই সৌদি প্রবাসী কামরুল ইসলাম (২৪),তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে। সৌদি প্রবাসী কামরুল ইসলাম যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সে জন্য পুলিশ ইমিগ্রেশনে চিঠি দিয়েছে।

নিহত শিশু রাজনের বাড়ি সিলেট নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামে। রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান মাইক্রোচালক। দুই ভাইয়ের মধ্যে সামিউল আলম রাজন বড়। অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করা রাজন সবজি বিক্রি করত।



মন্তব্য চালু নেই