আধুনিক সেবা বঞ্চিত জনসাধারণের চরম ভোগান্তিঃ

অবহেলিত, জরাজীর্ণ ইউপি : মেম্বার আছে, চেয়ারম্যান নাই

সেবা বঞ্চিত হাজীগঞ্জ উপজেলার নবগঠিত দ্বাদশ গ্রাম ইউনিয়নের জনগণ। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে নতুন ইউনিয়ন গঠিত হয়। কাগজ-কলমে দ্বাদশ গ্রাম ইউনিয়ন। নয়জন ইউপি সদস্য থাকলেও চেয়ারম্যান না থাকার ফলে জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নবগঠিত ইউনিয়নবাসী। এই ইউনিয়ন নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।

ওয়ার্ড গুলো হচ্ছে- ১ নং ওয়ার্ড মালাপাড়া, ২নং ওয়ার্ড চারিয়ানি, ৩নং ওয়ার্ড নাসির কোট, ৪নং ওয়ার্ড ইছাপুরা, ৫নং ওয়ার্ড কীর্ত্তণখোলা , ৬নং ওয়ার্ড কাপাইকাপ-রবিদাসপাড়া, ৭নং ওয়ার্ড দেওদ্রোন, ৮ নং ওয়ার্ড চরপাড়া, ৯নং ওয়ার্ড ব্রাক্ষণগাঁও -স্বেচ্ছালেন্দী। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জনপ্রতিনিধি না থাকায় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে। গতানুগতিক উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। তবে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধি ভাতা পায় না।

এছাড়াও অন লাইনে জন্ম নিবন্ধন, দপ্তরি নাই, ভবন নাই, ভূমি অফিস নাই, গ্রাম পুলিশ নাই, ইউনিয়ন পরিষদের আয় নাই ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় সম্পূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ।

ইউনিয়নের সমস্যা সমূহ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দ্বাদশ গ্রাম ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ও হাজীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শাহ্ আলী রেজা আশরাফি জানান, দূরত্ব বেশি হওয়ায় জনগণের প্রাপ্য সেবা দিতে আমার অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়া সচিব থেকেও অন্য ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকার কারণে ইউনিয়ন পরিষদে অনুপস্থিত থাকতে হয়। ফলে সাধারণ মানুষ টাকা খরচ করে উপজেলায় এসেই তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সমাধান করতে বাধ্য হচ্ছে।

তাই নির্বাচনের মাধ্যমে একজন চেয়ারম্যান অর্থাৎ জনপ্রতিনিধি নিয়োগ ও আপাততঃ সচিব নিয়োগ করে জনভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মাধ্যমিক অফিসের কর্মচারীরা আমাকে কাগজপত্র সংরক্ষণে কিছুটা সহযোগীতা করছে। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আইনগত জটিলতার কারণে সীমানা নির্ধারণ করা হয়নি। তাই নির্বাচন পিছিয়েছে।

বর্তমানে কোন আইনি জটিলতা নেই। ইউনিয়নের বাসিন্দা আতিকুলাহ পাটওয়ারি জানায়,‘ জনগণের চাহিদা পূরণে নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি প্রয়োজন। আমরা শীঘ্রই এ নতুন ইউনিয়নের নির্বাচনের দাবী জানাই।’ ইউপি সদস্য সাগর পাটওয়ারী মুঠোফোনে বলেন, আমরা নয়জন ইউপি সদস্য রয়েছি। এখানে প্রশাসক সময় না দেয়ার কারণে অনেক জটিলতা তৈরী হচ্ছে। সপ্তাহে মাত্র দুইদিন প্রশাসক কার্যলয়ে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি তা করেন না।

দুই নম্বর বাকিলা ইউনিয়নের সচিব মো: খবির উদ্দিন দ্বাদশ গ্রাম ইউনিয়নে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি জানান, জুলাই মাসে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি।

নব গঠিত ইউনিয়নের হাজার জনগণের ভোাগান্তির কথা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. মুর্শিদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন এই ইউনিয়নে এখনো সচিব পদে নিয়োগ হয়নি। ইউনিয়নের নির্বাচন ও সচিব নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’ উলেখ্য, ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ১১ ধারা এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের স্মারক নং স্থাসিবি/ইপ/ইউপি-২১/২০০৮(অংশ-১)/৭২৭, তারিখ- ০২-১২-২০১২ খ্রিঃ এর নির্দেশনা মোতাবেক জেলা প্রশাসক মো: ইসমাইল হোসেন ২৭ মার্চ ২০১৩ তারিখে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দ্বাদশ গ্রাম ইউনিয়ন ঘোষণা করেন।



মন্তব্য চালু নেই