সৈয়দ আশরাফের অব্যাহতিতে ‘থ’ মেরে গেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা
দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কেন মন্ত্রিত্বের দপ্তর হারালেন তা বুঝতে পারছেন না আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক সদস্য বলেছেন, এটা একান্তই দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বিষয়।
তবে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য আশরাফের দপ্তরবিহীন হওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসাবে গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, “একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই এই পরিবর্তন।”
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এক নেতা বলেন, “তখন (স্বাধীনতার পর) তো তাজউদ্দীন ভাইকে সরানো হয়েছিল, এবার আশরাফকে সরানো হল। সিগন্যাল তো ভালো মনে হচ্ছে না।”
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, “উনি (আশরাফ) তো কখনোই মিনিস্ট্রি এনজয় করতেন না।”
সঙ্গত কারণে নাম প্রকাশ করতে রাজি নন ওই কর্মকর্তাও।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার ধারণা, সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে কথা বলেই প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক যদি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করতেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী তাকে সরাতেন না।
মঙ্গলবার একনেকের বৈঠকে আশরাফের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পরও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর বিষয়টি আর বেশি দূর এগোয়নি।।
নিজ এলাকায় রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট প্রভৃতি অবকাঠামো নির্মাণের জন্যে প্রত্যেক সাংসদদের ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে ছয় হাজার ৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের সময় আশরাফ বা প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা উপস্থিত না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী তাকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন প্রকাশ্যে।
তখন আশরাফ ‘গুজবে’ কান না দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আশরাফের সঙ্গে বৈঠকের পরই প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে সৈয়দ আশরাফ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে যান এবং সোয়া ২টা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আশরাফের একান্তে কথা হয় কমপক্ষে ১৫ মিনিট।
সরকার প্রধানের কক্ষ থেকে বের হবার পর আশরাফ হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহীর সঙ্গেও কিছুক্ষণ কথা বলেন।
সম্প্রতি সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে চীন সফরে যাওয়া আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এক সদস্য বলেন, “আশরাফ কী ধরনের মানুষ, তা চীনে না গেলে বুঝতাম না।”
“শেখ হাসিনা আর আশরাফের বিষয়ে কোনো কথা না বলাই ভালো।”
আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনেই কাজ করেন আশরাফ। নেত্রীর প্রতি তার আনুগত্যও প্রশ্নাতীত।
আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, “ভাই, পুরো বিষয়টাই ভাই-বোনের বিষয়। এই বিষয়ে কথা না বলাই ভালো।” বিডিনিউজ২৪
মন্তব্য চালু নেই