এলাকায় ফিরছে উখিয়ার মানবপাচারকারীরা

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ অভিযানের ধারাবাহিকতায় স্থিমিত হওয়ার সুযোগে উখিয়ার ৪৬টি মামলার প্রায় ৩ শতাধিক তালিকাভুক্ত মানবপাচারকারী দুর্বৃত্তরা সম্প্রতি বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে এলাকার স্বজনহারা ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে বিরাজ করছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। তাদের দাবি, এসব মানুষ নামের অমানুষ হিংস্র জানুয়ারগুলো প্রতিশোধের নেশায় প্রতিবাদী স্বজনহারাদের যে কোন সময়ে ক্ষতি করতে পারে।

আমেরিকাভিত্তিক এনজিও সংস্থা রিলিপ ইন্টারন্যাশনালের অর্থায়নে পরিচালিত হেলপ কক্সবাজারের জেলাভিত্তিক জরিপে উঠে এসেছে গত সাড়ে ৩ বছরে উখিয়ার সোনারপাড়া হতে মনখালী পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার উপকুলীয় এলাকা দিয়ে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক স্কুল ছাত্র, কিশোর, যুবক ও প্রাপ্ত বয়স্ক সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন থানায় ১৫৩১ জন মানবপাচারকারীকে আসামী করে ৩০৬টি মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা রুজু হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ সময় ৪৭৭ জন মানবপাচারকারীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও আইনের ফাঁকপোকর দিয়ে অধিকাংশ মানবপাচারকারী জামিনে বেরিয়ে এসেছে।

সম্প্রতি উখিয়া ও টেকনাফ থানা পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় টেকনাফের শীর্ষ ৩ মানবপাচারকারী ও উখিয়ার সোনারপাড়া গ্রামের জাফর মাঝি নিহত হওয়ার পর উখিয়া থানার তালিকাভুক্ত মানবপাচারকারী আসামীরা আত্মগোপন করে। গত ২ মাসে থানা পুলিশ, ইনানী ফাঁড়ি ও কুতুপালং ক্যাম্প পুলিশ প্রায় অর্ধশতাধিক মানবপাচারকারীকে আটক করে। বেশ কয়েকদিন ধরে পুলিশী অভিযান নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে মানবপাচারকারী দুর্বৃত্তরা বাড়িঘরে ফিরে এসে আরাম আয়েশে দিনযাপন করছে। তারা বীরদর্পে চলাফেলা করার সুযোগ পাওয়ার কারণে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে ক্ষতিগ্রস্থ স্বজনহারাদের মাঝে। রাজাপালং ইউনিয়নের পিনজিরকুল গ্রামের স্বজনহারা ফরিদ আলম জানান, দালালের খপ্পরে পড়ে তার একমাত্র ছেলে রুবেল (২২) গত ৩ মাস ধরে থাইল্যান্ডের মরদহনা কারাগারে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সে আরো জানান, আত্মগোপনে থাকা প্রভাবশালী মানবপাচারকারীরা বেরিয়ে এসে কোন মামলায় না জড়ানোর ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।

গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় উখিয়া প্রেস ক্লাবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, মানব পাচারের সাথে জড়িত অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানেও বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাদের কারণে মানবপাচারকারীরা অনায়সে ঘুরাফেরা করে ক্ষতিগ্রস্থ স্বজনহারাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করার সাহস পাচ্ছে। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান জানান, পুলিশ গত ২ মাসে অর্ধশত মানবপাচারকারীকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। বাদ বাকীদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই