ক্যান্সার নির্ণয় করবে কুকুর !
ক্যান্সার শনাক্ত করতে হলে প্যাথলজি অর্থাৎ নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর দরকার হয়। আর শুধু পরীক্ষা করালেই হয় না, কাগজপত্র দেখে ক্যান্সার আছে কি নেই, তা বুঝতে দরকার হয় একজন চিকিৎসকের। পুরুষের প্রসাবের ঘ্রাণ শুঁকেই প্রস্টেট ক্যান্সার নির্ণয় করতে পারে কুকুর। সম্প্রতি ইতালির এক গবেষকদল জানিয়েছেন, কুকুর ৯৮.৭ শতাংশ সঠিকভাবে প্রস্টেট ক্যান্সার নির্ণয় করতে সক্ষম।
গবেষকরা জানিয়েছেন, গবেষণা প্রতিবেদনটি দেখে চোখ কপালে উঠতে পারে অনেক ডাক্তারের। কারণ এতে বলা হয়েছে, গন্ধ শুঁকে কয়েক ধরনের ক্যান্সার নির্ণয় করতে পারে কুকুর। এদের মধ্যে ডেইজি নামের সাত বছর বয়সী একটি ল্যাব্রাডর কুকুর রয়েছে। আর প্রায় ৯৭.৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই ওরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়।
সম্প্রতি ইউরোলজির জার্নালে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পৃথকভাবে একটি কুকুর ৯৮.৭ শতাংশ সঠিকভাবে প্রস্টেট ক্যান্সার নির্ণয় করতে সক্ষম; যেখানে ২টি কুকুর একসাথে ৯৭.৬ শতাংশ সঠিকভাবে এ ক্যান্সার নির্ণয় করতে পারে।
গবেষণাটি পরিচালনা করে মিলানের হিউম্যানিটাস ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের ইউরোলজি বিভাগের ওই গবেষণায় নমুনা হিসেবে ব্যবহার করা হয় ৯০০ মানুষের প্রসাব। এর মধ্যে ৩৬০ জন প্রস্টেট ক্যান্সার ও ৫৪০ জন অনান্য রোগে আক্রান্ত।
গবেষকরা বলেন, পুরুষের প্রসাবের মধ্যে উদ্বায়ী (যা কঠিন থেকে তরল না হয়ে বাষ্প হয়ে যায়) জৈব উপাদান শুঁকে প্রস্টেট ক্যান্সার নির্ণয় করতে সক্ষম কুকুর।
যুক্তরাজ্যে পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্টেট ক্যান্সার খুবই সাধারণ ঘটনা। প্রতি বছর ৪০ হাজার নতুনভাতে এ রোগ নির্ণয় করে থাকে।
গবেষক দলের প্রধান গেস্ট বলেন, এ গবেষণা ফলাফল দর্শনীয়। মানব ক্যান্সার নির্ণয়ে কুকুরের সক্ষমতা আরও প্রমাণ করতে প্রস্তাব করেছে যুক্তরাজ্য। প্রস্টেট ক্যান্সার নির্ণয়ে কুকুরের উচ্চ সফলতার হার খুবই উত্তেজনাকর। কারণ ক্যান্সার নির্ণয়ে প্রচলি পরীক্ষা অপর্যাপ্ত। পুরোনো প্রযুক্তিতে এ পরীক্ষা করতেও অনিচ্ছুক রোগীরা। এখনো প্রস্টেট ক্যান্সারের জন্য কোনো পৃথক পরীক্ষা আবিষ্কৃত হয়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ক্যান্সার নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষা, শারীরিক পরীক্ষা বা বায়োপসি করা হয়। কুকুরের মাধ্যমে ক্যান্সার নির্ণয় অনেক সম্পদের অপচয় কমাবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, পুরুষদের প্রস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সারকেই প্রস্টেট ক্যান্সার বলে। পুরুষদের মধ্যে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক বেশি। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়স হলে পুরুষদের মধ্যে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। শুধু পুরুষদেরই প্রস্টেট গ্রন্থি রয়েছে। এর আকার অনেকটা কাজুবাদামের সমান।
মূত্রথলির নিচ থেকে যেখানে মুত্রনালী বের হয়েছে সেটির চারপাশ জুড়ে এই গ্রন্থিটি বিদ্যমান। এর মধ্য দিয়েই মুত্র এবং বীর্য প্রবাহিত হয়। কোনো কারণে যদি প্রস্টেট বড় হয়ে যায় তাহলে মুত্রনালীর মুখ সংকুচিত হয়ে আসে। ফলে মুত্র বের হতে সমস্যা হয়।
সূত্র: মেইল অনলাইন
মন্তব্য চালু নেই