কিছু সাধারন কৌশল যা এই অসহ্য গরমেও আপনাকে সুস্থ রাখবে
সারা দেশে এখন চলছে গরম হাওয়া। এই গরমে সুস্থ থাকা দায়। সুস্থ থাকার জন্য তাই অবলম্বন করতে হবে কিছু সাধারণ কৌশল, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
প্রচুর পানি পান করুন
গরমের দিনে এমনিতেই একটু বেশি পানি পান করা উচিত। কারণ এ সময় অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর পানি স্বল্পতায় ভোগে। তা ছাড়া যারা কায়িক পরিশ্রম বেশি করেন এবং অনেকক্ষণ রোদে অবস্থান করেন তাদের ক্ষেত্রে বেশি পানি পানের ব্যাপারে বাড়তি আগ্রহ থাকতে হবে। শরীরের পানি ও লবণ ঘাটতি মেটানোর জন্য মুখে খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে। শিশুরা নিজ থেকে পানি পান করতে ততটা আগ্রহী থাকে না। তাই শিশুকে এই গরমে পরিমাণ মতো পানি অবশ্যই পান করাতে হবে, যাতে শিশুর শরীরে পানি স্বল্পতার সৃষ্টি না হয়।
পানি স্বল্পতা হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। গরমের সময় প্রস্রাব হলুদাভ বণের্র হলে বুঝতে হবে শরীরে পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হয়েছে। অন্য কোনো অসুখ বিশেষ করে হেপাটাইটিস বা জন্ডিসের কোনো উপসর্গ না থাকলে প্রস্রাবের হলুদাভ রঙ থেকেই শরীরের পানি স্বল্পতা সম্পর্কে ধারণা করা যায়। প্রস্রাব হলুদাভ রঙের হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর পানি পান করতে হবে। যতক্ষণ না প্রস্রাবের রঙ স্বাভাবিক হবে ততক্ষণ এই পানি পান চালিয়ে যেতে হবে। শরীর বেশি অসুস্থ হলে স্যালাইন পানি পান করা ভালো। তবে অন্য পানীয় পানে বিশেষ কোনো উপকার নেই। বিশেষ করে অ্যালকোহলযুক্ত বেভারেজ পান করলে শরীরে আরো বেশি পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হয়। তাই পানি স্বল্পতারোধ করতে গিয়ে অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়পান করলে শরীর আরো বেশি পানি হারাবে।
চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিন
প্রচণ্ড গরমে অনেকেরই চোখ জ্বালা করে। এই পরিস্থিতিতেচোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিলে আরাম লাগবে। পারলে কিছুক্ষণ ঠাণ্ডা পরিবেশে বিশ্রাম নিতে হবে, পান করে নিতে হবে এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি।
শরীর থেকে দুর্গন্ধ দূর করতে পরিচ্ছন্ন গোসল
পরিচ্ছন্নতার জন্য গরমকালে দু’বার গোসল করে নেওয়া ভালো। দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বারবার সাবান ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে ত্বকের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তবে গোসলে বিশেষ ধরনের সাবান অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সোপ ব্যবহারে উপকার আছে।
ঘাম প্রতিরোধে ডিওডোরেন্ট
শরীরে ঘামজনিত দুর্গন্ধ দূরকরার জন্যই ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা হয়। আর অ্যান্টিপারসপিরেন্ট ঘাম তৈরিতে বাধা দেয়। ডিওডোরেন্ট ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে এবং ঘামকে বিশ্লেষণ করে। ডিওডোরেন্ট গোসলের পরপরই ব্যবহার না করে গোসলের কিছু সময় পর শরীর শুকনো ও ঠাণ্ডা করে তারপর ব্যবহার করুন। এতে ডিওডোরেন্ট দীর্ঘসময় কার্যকারিতা পাবে।
চোখের অস্বস্তি দূর করতে সানগ্লাস
গরমের শাণিত রোদে চোখে অস্বস্তিবোধ হওয়াই স্বাভাবিক। পারলে এ অবস্থায় চোখে সানগ্লাস পরা যেতে পারে। সানগ্লাস চোখকে রোদের অস্বস্তি থেকে রেহাই দেবে।
খেতে হবে শাকসবজি ফলমূল
গরমের দিনে চর্বিযুক্ত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা ভালো। চর্বি জাতীয় খাবার শরীর আরো উত্তাপ লাভ করবে, ঘাম ও অস্বস্তি দুই-ই বাড়বে। চবির্র সঙ্গে অতিমাত্রায় চিনিযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলা স্বস্তিদায়ক। এ সময় নিয়মিত খাবারের তালিকায় যোগ করতে হবে ফলমূল ও শাকসবজি।
অ্যাজমা রোগীদের সতর্ক থাকতে হবে
অতিরিক্ত গরমে অনেকেরই অ্যাজমার সমস্যা তীব্র হয়। এ অবস্থায় অ্যাজমা রোগীরা যাতে গরমের অস্বস্তিকর পরিবেশের মুখোমুখি না হন সে ব্যবস্থা তাদের নিজেদের গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসকের দেওয়া চিকিৎসা নিয়মিতভাবে গ্রহণ করতে হবে, মেনে চলতে হবে উপদেশগুলো। এ সময় হাতের কাছে অ্যাজমার জন্য দেওয়া শ্বাসনালী প্রসারক ইনহেলারটি হাতের কাছে রাখতে ভুলবেন না।
সূযের্র পোড়া এড়াতে সানস্ক্রিন
সূযের্র দাবদাহ থেকে ত্বককে রক্ষা করার জন্য শরীরের উন্মুক্ত অংশে সানস্ক্রিন ক্রিম মাখা যেতে পারে। সানস্ক্রিন প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর মাখতে হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের সানস্ক্রিন বা সানব্লকার ক্রিম পাওয়া যায়। আমাদের দেশের জন্য এসপিএফ-১৫ শক্তিসম্পন্ন সানব্লকারই যথেষ্ট বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। গরমে অনেকেরই ত্বক লালাভ হয়ে ওঠে। ত্বকে চাকা চাকা র্যাশও ওঠে অনেকের। এই র্যাশগুলো খুব চুলকায়। এই ধরনের র্যাশ ঠাণ্ডা পরিবেশে অর্থাৎ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকলে কমে যায় বা চলে যায়। অবস্থাটা এ রকম হলে বুঝতে হবে গরমে ত্বকের অতিসংবেদনশীলতার জন্য এমনটি হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই