মেঘালয় থেকে সালাহ উদ্দিনের ফোন : নিশ্চিত করলেন স্ত্রী (ভিডিও)

বিএনপির ‘নিখোঁজ’ যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভারতের মেঘালয় থেকে ফোন দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ৬৩ দিন পর তার সন্ধান মিলল।

গুলশানের নিজের বাসায় মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করে বলেন, ‘দুপুরের আগে মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ তাকে ফোন দিয়ে জানান- সালাহ উদ্দিন আহমেদ সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন এবং তিনি কথা বলতে চান। এ সময় বেশ কিছুক্ষণ তিনি সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে কথা বলেন।’

হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্স হাসপাতালটি ভারতের মেঘালয় প্রদেশের শিলংয়ের পাসতোর হিলসে অবস্থিত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের ফোন করে বলেন, আপনার স্বামী আপনার সঙ্গে কথা বলবেন। তখন আমি ফোন ধরলে অপর প্রান্ত থেকে আওয়াজ আসে, ‘আমি সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলছি, আমি একটি মানসিক হাসপাতালে আছি। সুস্থ আছি, জীবিত আছি। তুমি সবাইকে এ খবরটা জানিয়ে দাও। সবাই যেন আমার জন্য দোয়া করেন।’’

সালাহ উদ্দিন আহমেদের কণ্ঠ চিনতে পেরেছেন কি না- গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি এক শ’ বছর পরও তার (সালাহ উদ্দিন) গলা চিনতে পারব। তিনিই ফোন দিয়েছেন।’

সালাহ উদ্দিনকে ফিরিয়ে আনতে সরকারসহ সবার সহযোগিতা কামনা করে হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘খুব দ্রুত চেষ্টা করছি, ওনার (সালাহ উদ্দিন) কাছে পৌঁছাতে।’

দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হাসিনা আহমেদ বলেন, দেশবাসী ঘটনার পর থেকেই তাদের পরিবারের সঙ্গে ছিলেন। তাদের সাহস দিয়েছেন। দোয়া করেছেন। দেশবাসীর কাছে তারা কৃতজ্ঞ।

তিনি জানান, সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার পর এই খবর জানানোর জন্য খালেদা জিয়ার বাসায় যান। খালেদা জিয়া তার (সালাহ উদ্দিন) সন্ধান পাওয়ার খবর জানার পর শুকরিয়া আদায় করেছেন।

গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার পরিবার ও বিএনপি অভিযোগ করে আসছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে দিয়েছে। নিখোঁজ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবকে খোঁজা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সালাহ উদ্দিনকে পেলে গ্রেপ্তার করবে পুলিশ।

সালাহ উদ্দিন আহমেদের খোঁজ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদনও করেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। এ ছাড়া এক মাসেরও কম সময়ে ব্যবধানে স্বামীর সন্ধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে দুইবার স্মারকলিপি দিয়েছেন হাসিনা আহমেদ।

সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য হন এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তার স্ত্রী হাসিনাও সংসদ সদস্য ছিলেন। তাদের দুই ছেলে, দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে সৈয়দ ইব্রাহিম আহমেদ কানাডায় ও বড় মেয়ে পারমিজ আহমেদ ইকরা মালয়েশিয়ায়, ছোট ছেলে সৈয়দ ইউসুফ আহমেদ ও ছোট মেয়ে ফারিবা আহমেদ রাইসা ঢাকায় স্কলাস্টিকায় পড়ালেখা করে।



মন্তব্য চালু নেই