ডায়বেটিস সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এড়িয়ে চলুন ১০ টি ক্ষতিকর খাবার

ইদানীং প্রায় প্রতি ঘরেই ডায়বেটিসের রোগী নজরে পড়ে। ডায়বেটিসের সমস্যা অনেকাংশে বংশগত হলেও পরিবারে ডায়বেটিস রোগের ইতিহাস না থাকলেও অনেককেই এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এই সমস্যা হচ্ছে মূলত জীবনযাপনের অনিয়মের কারণে। সমস্যা হচ্ছে ডায়বেটিস রোগীদের অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে জীবনযাপনের একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চললেই এই রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। একটু অনিয়ম দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তাই বেছে এবং পরিমিত খেয়ে জীবনযাপনে সচেতনতা অবলম্বন করতে হয় ডায়বেটিস রোগীদের। ডায়বেটিস মানে খাবার খাওয়া বাদ দেয়া নয় বরং পরিমিত খাওয়া। তবে কিছু খাবার ডায়বেটিস রোগীদের জন্য একেবারেই নিষিদ্ধ। কারণ এই খাবারগুলো হুট করেই ডায়বেটিসের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। তাই ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন।

১) চাইনিজ খাবার

অনেক বেশি ফ্যাট, ক্যালরি, সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ চাইনিজ খাবার হুট করেই দেহের সুগারের মাত্রা অনেক বেশি বাড়িয়ে ফেলতে সক্ষম। বিশেষ করে অরেঞ্জ ফ্লেভার, সুইট অ্যান্ড সাওয়ার ধরণের চাইনিজ খাবার ডায়েবটিস রোগীদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর।

২) কিশমিশ ও ড্রাইফ্রুটস

সাধারণ মানুষের জন্য কিশমিশ খাওয়া বেশ স্বাস্থ্যকর। কিন্তু ডায়বেটিক রোগীদের জন্য কিশমিশ ক্ষতিকর একটি খাবার। কারণ যেকোন ফল যখন ড্রাই করা হয় তখন তাতে চিনির পরিমান দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। এতে করে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়।

৩)ঘন দুধের তৈরি খাবার

দুধ পান করা স্বাভাবিকভাবে ডায়বেটিক রোগীদের জন্য ভালো, দুধ যদি অনেক ঘন করে জ্বাল দিয়ে কোনো খাবার তৈরি করা হয় এবং তাতে একটু মিষ্টি মেশানো থাকে যেমন মিষ্টি দই, ক্রিম, চীজ, পায়েস, ক্ষীর ধরণের খাবারগুলো ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য নিসিদ্ধ।

৪) কলা ও তরমুজ

তাজা ফলমূল স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর হলেও যে ফলে চিনির মাত্রা বেশি সেই ফলমূল ডায়বেটিস রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। কলা এবং তরমুজের মতো ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি যা রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ায়। তাই এই খাবারগুলো থেকে দূরে থাকাই ভালো।

৫) সাদা চাল ও পাউরুটি

সাদা চালের ভাত যতো বেশি খাওয়া হয় ততো বেশি টাইপ-২ ডায়বেটিসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। প্রায় ৩,৫০,০০০ মানুষের উপর গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিন সাদা চালের ভাত নিয়মিত খাওয়ার ফলে প্রায় ১১% টাইপ-২ ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। একই ব্যাপার লক্ষ্য করা যায় পাউরুটির ক্ষেত্রেও। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমেই সাদা চালের ভাত ও পাউরুটি খাবেন।

৬) বোতলজাত ফলের জুস

স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে সোডা বাদ দিয়ে ফলের জুস পান করলেও কিন্তু ডায়বেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন না। কারণ বোতলজাত ফলের জুস পান করা এবং সোডা পান করার মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। বোতলজাত ফলের জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও ক্যালরি যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

৭) ফ্রেঞ্চ ফ্রাই

শখ করে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়ার আশা একেবারেই ছেড়ে দিন ডায়বেটিস রোগীরা। কারণ ডুবো তেলে ভাজা এই খাবারটি খাবার দেহের ওজন বৃদ্ধি করে এবং রক্তে সুগারের মাত্রা নষ্ট করে। তাই কষ্ট হলেও দূরেই থাকুন।

৮) চিনি জাতীয় খাবার

চিনি সমৃদ্ধ কুকিজ, মিল্ক চকলেট, ক্যান্ডি, সিরাপ ইত্যাদি খাবারগুলো কিন্তু ডায়বেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো খেলে রক্তের সুগার বৃদ্ধি পায় এবং স্বাভাবিক ভাবেই ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হয় না।

৯) ইনস্ট্যান্ট খাবার ও সিরিয়াল

ইনস্ট্যান্ট ধরণের সকল খাবার ডায়বেটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি স্বাস্থ্যকর ইনস্ট্যান্ট ওটমিলও ডায়েবেটিস রোগীদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এছাড়াও সুইটেন্ড ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল ধরণের খাবারগুলো ডায়বেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

১০) কেক ও পেস্ট্রি

বেক করা কার্বোহাইড্রেট সাধারণভাবেই দেহে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই কেক ও পেস্ট্রি জাতীয় সকল খাবার থেকে ডায়বেটিস রোগীরা দূরে থাকুন। এমনকি প্যানকেকও আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

সূত্রঃ হেলথডাইজেস্ট



মন্তব্য চালু নেই